মুত্যু এক অনিবার্য সত্য : আমাদের করণীয়

মুত্যু এক অনিবার্য সত্য : আমাদের করণীয়

সংগৃহিত

মৃত্যু কি? মৃত্যু হলো এই জাগতিক জীবনের পরিসমাপ্তি। মৃত্যু হলো আত্মা ও দেহের সম্পর্ক ছিন্ন করে আত্মাকে অন্যত্র স্থানান্তর করার নাম। আর আত্মার এ স্থানান্তরের সাথে সাথেই শুরু হয় পরপারের যাত্রা। এর মধ্য দিয়েই দুনিয়ার জীবনের অবসান ঘটে। অর্থাৎ পার্থিব জীবন থেকে পরকালীন জীবনে পা বাড়ানোর মাধ্যম হলো মৃত্যু। দুনিয়ার জীবন মানুষের জন্য এক পরীক্ষার ক্ষেত্র বিশেষ। এখানে তাকে প্রতিনিয়ত মুখোমুখি হতে হয় নানান রকম ঝক্কি ঝামেলা আর প্রতিকুলতার। কখনো চারপাশ তাকে দারুন আশাবাদী করেন। আবার কখনো নিদারুন হতাশ করে দেয়। জীবনের বিভিন্ন দিক তাকে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে নাড়া দেয়। কিন্তু যে বিষয়টি তার জীবনের শুরু থকে শেষাবধি পিছু পিছু চলে তার নাম হলো মৃত্যু। মৃত্যুর কোন অভিজ্ঞতা হয় না। কোন মানুষ মৃত্যুবরণের পর ফিরে আসে না। ফিরে এসে সে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার কোন সুযোগও থাকে না। মৃত্যু একবারই হয়। এই জগত থেকে তাকে পরলোকে নিয়ে যায় মৃত্যু। তারপর? মৃত্যুতে কি মানুষের সব শেষ হয়ে যায়? এখানেই প্রয়োজন বিশ্বাস। যে বিষয় সম্পর্কে মানুষের কোন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ জ্ঞান নেই সে সম্পর্কে কিছু বলার কিই বা আছে। আমরা জগত জয় করে চলেছি জ্ঞান দিয়ে। এই জ্ঞান দু’ধরণের। এক অভিজ্ঞতাপ্রসূত ও সাধনালব্ধ। আরেকটি জ্ঞান হলো স্রষ্টা প্রদত্ত।

আমরা বিশ্বাসস করি মহান আল্লাহ এই বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন এবং এখানে মানুষকে পাঠিয়েছেন। মানুষের জন্য তার জীবনোপকরণের যতকিছু পাঠানো হয়েছে জ্ঞান তার মধ্যে শ্রেষ্ঠতর। মানুষ জানেনা তার শুরু এবং শেষ কোথায়? যে জ্ঞান তাকে চলার পথ বাতলে দেয় তা সঠিকও হতে পারে আবার ভুলও হতে পারে। মানুষের নিজের শিক্ষা তার জীবনের জন্য ভুল-সঠিক দুই-ই হতে পারে। কারণ সে তার অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্পর্কে নির্ভুল জ্ঞানের অধিকারী নয়। নির্ভুল জ্ঞান তাঁরই আছে যিনি এর অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত রচনা করেছেন। তিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা। তিনি আল্লাহ। যাঁর ইচ্ছা ও কর্তৃত্বের অধীন এই বিশ্ব চরাচর। আমরা অনেকেই নিজেদের জীবনের এসব প্রসঙ্গ উঠলেই বিজ্ঞানকে টেনে আনি। কিন্তু এটা বুঝতে চাইনা বিজ্ঞান নিজে থেকে সৃষ্ট কোন বিষয় নয়। যিনি বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন আমাদেরকে জীবনদান করেছেন। তিনিই মানুষকে উদ্ভাবন করার যোগ্যতা দিয়েছেন। মানুষ পৃথিবীতে ক্রিয়াশীল থাকার কারণ তার জীবনী শক্তি। যেটাকে পবিত্র কুরআনে ‘রুহ’ বলা হয়েছে।

এই রুহ যতক্ষণ কার্যকর থাকে মানুষ ততক্ষণ জীবিত থাকে। আর যখনই এর পরিসমাপ্তি ঘটে তখনই সে মৃত হয়ে যায়। রুহ সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, “হে নবী আপনাকে রুহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে, আপনি বলেদিন রুহ আমার রবের নির্দেশ বিশেষ।”-সূরা বনি ইসরাইল-৮৫। বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা কি এ প্রসঙ্গে? বিজ্ঞানও বলেছে মানুষের ভেতরে ক্রিয়াশীল শক্তি থেমে গেলেই তার মৃত্যু হয়। আসলে মানুষের উদ্ভাবিত জ্ঞানের মধ্যে সীমাবদ্ধতা থাকলেও যিনি স্রষ্টা তাঁর প্রদত্ত জ্ঞানই নির্ভুল। মৃত্যু সম্পর্কে এটাই চুড়ান্ত। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ মৃত্যুর কাছেই হার মেনেছে। মৃত্যুই তার জীবনের যবনিকাপাত ঘটিয়েছে। অন্য কিছুতে নয়। মৃত্যুকে ভয় পান না এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়নি। মৃত্যু মানুষকে থামিয়ে দেয়। শান্তনার জায়গা তৈরি করে দেয়।

মহান আল্লাহকে কেউ বিশ্বাস করুক আর নাই করুক। আমাদের সবাইকে তাঁর কাছে আবার ফেরত যেতে হবে। দুনিয়ার কোন শক্তি তা ফেরাতে আজ পর্যন্ত পারেনি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না। এটাই অনিবার্য সত্য। দুনিয়ার জীবন কেউ ধরে রাখতে পারে না। সময়কে বরণ করতেই হয়। আমাদের জীবনদাতা আল্লাহ। আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও অনেক মৃত্যুই বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে ঘটে। যেমন বর্তমানে সারাবিশ্বে কভিড-১৯ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যেই প্রায় আট লাখ মানুষ মারা গেছে। যা আমরা অনেকের মতো চেয়ে চেয়ে দেখছি। মৃত্যু সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,

  • “প্রতিটি জীবকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে; অত:পর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।” সূরা আনকাবুত, আয়াত ৫৭
  • “তোমরা যে মৃত্যু থেকে পালাতে চাও, সে মৃত্যুর সাথে অবশ্যই  তোমাদের সাক্ষাত হবে, অতপর তোমাদেরকে সেই মহান আল্লাহর কাছে ফেরত পাঠানো হবে, যিনি প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল বিষয় জানেন এবং তিনি তোমাদেরকে তোমাদের আমল ও কাজ-কর্ম সম্পর্কে অবহিত করবেন।” সূরা আল জুমুয়া, আয়াত ৮
  • “তোমরা যেখানে যে অবস্থায়ই থাকো না কেন, মৃত্যু তোমাদের ধরবেই। যতো মজবুত দুর্গের মধ্যে তোমরা অবস্থান করোনা না কেন।” সূরা আন নিসা, আয়াত ৭৮
  • “এরপর তোমাদের মৃত্যু হবে, তারপর কিয়ামতের দিন তোমাদের আবার  ওঠানো হবে।” সূরা মুমিনুন, আয়াত ১৫-১৬
  • “তোমরা কেমন করে আল্লাহকে  অস্বীকার কর, (যখন) তোমাদের প্রাণ ছিল না তিনিই তোমাদের প্রাণ দিয়েছেন, পরে  তিনিই তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন, তারপর আবার জীবিত করবেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে?” সূরা বাকারা, আয়াত ২৮
  • “তিনিই জীবন দান করেন। আর তিনিই মৃত্যু ঘটান।” সূরা তওবা, আয়াত ১১৬
  • “ তোমার তো মৃত্যু হবে, এবং  তাদেরও।  তারপর কিয়ামতের দিনে তোমরা নিজেদের মধ্যে তোমাদের প্রতিপালকের সামনে, তর্কাতর্কি করবে।” সূরা জুমার, আয়াত ৩০-৩১
  • “মৃত্যু এলে আল্লাহ্ প্রাণ হরণ করেন। আর যারা জীবিত তাদেরও তিনি চেতনাহরণ করেন ওরা যখন নিদ্রিত থাকে। তারপর যার জন্য মৃত্যু অবধারিত করেছেন তিনি তার প্রাণ রেখে দেন আর অন্যজনকে এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চেতনা ফিরিয়ে দেন। এর মধ্যে তো চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে। সূরা জুমার, আয়াত ৪২

নির্ধারিত সময়ে ও স্থানে মৃত্যু হবে: মৃত্যু কোন ব্যক্তির ইচ্ছানুযায়ী তার সুবিধা মতো সময় এবং পছন্দনীয় স্থানে আসবে না। বরঞ্চ তা আসবে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী তাঁরই নির্ধারিত সময় ও স্থানে।

  • “কোন প্রাণীই আল্লাহর অনুমতি ছাড়া মরতে পারবেনা। মৃত্যুর সময়টাতো নির্দিষ্টভাবে লিখিতই রয়েছে।”-সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৫
  • “কোন প্রাণীই জানে না কোথায় এবং কিভাবে তার মৃত্যু হবে।” সূরা লোকমান, আয়াত ৩৪
  • “সকল উম্মতের রয়েছে সুনির্দিষ্ট জীবন বা হায়াত। যখন তাদের সেই সুর্নির্দিষ্ট সময় উপস্থিত হবে তখন তারা সেই সময়কে মুহুর্তের জন্যও আগে পিছে করতে পারবে না” সূরা ইউনুস ৪৯
  • “আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারণ করেছি।” সূরা ওয়াকিয়া, আয়াত ৬০
  • “আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন আর কেউ কেউ বয়সের শেষে গিয়ে পৌছাবে, সব কিছু জানার পরও তাদের আর কোন জ্ঞান থাকবে না। আল্লাহ তো সর্বজ্ঞ শক্তিমান।” সূরা নাহল, আয়াত ৭০

অবিশ্বাসী এবং বদকার মৃত্যুর ভয়াবহতা: অবিশ্বাসী ও বদকার লোকেরা সবসময় মৃত্যুকে ভয় পায়। এদের মৃত্যুর সময় করুণ অবস্থার সৃষ্টি হবে। সূরা আনফালের ৫০-৫১ নং - সূরা আনফাল, আয়াত ৫০-৫১ মহান আল্লাহ বলেন, “ফেরেশতারা যখন কাফিরদের জান কবয করে, তখনকার অবস্থা যদি দেখতে পেতে! জান কবযের সময় ফেরেশতারা তাদের মুখমন্ডল এবং পৃষ্ঠদেশে আঘাত করতে থাকে আর বলতে থাকেঃ যাও, এবার আগুনে জ¦লবার শাস্তি ভোগ করোগে! এ হলো তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই করা শাস্তি। আল্লাহ তাঁর বান্দাহদের প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করেন না।”

“জান কবয করবার সময় ফেরেশতারা যখন তাদের মুখে-পিঠে আঘাত হানতে থাকবে, তখন তাদের কী অবস্থা হবে! তাদের এমন অবস্থা। এ কারণে হবে যে, তার সেইসব পথের অনুসরণ করেছে, যা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করেছে আর তারা আসলেই আল্লাহকে সন্তুষ্ট করবার কাজটি অপছন্দ করেছে। তাই তিনি তাদের সমস্ত কর্মকান্ড নিষ্ফল করে দিয়েছেন।” সূরা মুহাম্মদ, আয়াত ২৭-২৮

বিশ্বাসী এবং নেককার লোকদের মৃত্যু: নেককার লোকদেরকে মৃত্যুর ফেরেশতারা এসে সালাম করবে। পরবর্তী জীবনের সুখ আনন্দ ও পুরষ্কারের সুসংবাদ শুনাবে। সুরা আন নহল এর ৩২ নং আয়াতে বলা হয়েছে,  “সেসব লোক, ফেরেশতারা যাদেরকে পবিত্র জীবনের অধিকারী অবস্থায় ওফাত দান করতে আসে, তাদেরকে বলেঃ তোমাদের প্রতি সালাম, শান্তি বর্ষিত হোক। তোমরা যাও জান্নাতে প্রবেশ করো তোমাদের আমলের বিনিময়ে।”

মুমিনরা মৃত্যুকে ভালোবাসে। তারা মৃত্যুর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আকাঙ্খা করে। যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন তার সান্নিধ্য পাওয়া এক অন্যরকম অনুভূতি। কারণ মুমিনের দুনিয়ার জীবনে সকল কাজ, ভালোবাসা, আবেগ-আকুতি সব কিছুই হয় মহান রব এর জন্য।

“নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ এই সবকিছুই মহান আল্লাহর জন্য যিনি সারাবিশে^র (জাহানের অধিপতি, প্রতিপালক) প্রভূ তাঁর কোন শরীক নেই। ইহাই আমার উপর হুকুম (আদেশ হয়েছে)। আমি তাঁর একান্ত বাধ্যগত (অনুগত) গোলাম। তারই কথা জীবনে মেনে চলব। সূরা আন’আম, আয়াত ১৬২-১৬৩

আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, আল্লাহ তা’য়ালা বলেন: যখন আমার কোনো দাসের প্রাণের আকাংখা হয় আমার সাক্ষাত লাভ, তখন আমিও তার সাক্ষাতকে ভালবাসি। আর যখন কেউ আমার সাক্ষাতকে অপছন্দ করে, তখন আমিও তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করি।” -সহীহ আল বুখারী।

উবাদা ইবনে সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাত লাভ করাকে ভালোবাসে, আল্লাহও তার সাক্ষাতকে ভালোবাসেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাতকে অপছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করেন। একথা শুনে আয়েশা অথবা তাঁর কোন একজন স্ত্রী বললেন: ‘আমরা তো মৃত্যুকে অপছন্দ করি!’ এ কথার জবাবে তিনি বললেন: না, ব্যাপার তা নয়। বরং মুমিনের যখন মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং তাঁর অনুগ্রহ লাভের সুসংবাদ দেয়া হয়। তখন তার সম্মুখের জিনিসটির চাইতে প্রিয়তর কোন  কোনো জিনিস আর থাকেনা। তখন সে আল্লাহর সাক্ষাত লাভের আকাঙ্খায় উদ্বেলিত হয়ে উঠে। তখন আল্লাহও তার সাক্ষাতকে ভালবাসেন। কিন্তু কাফিরের অবস্থা ভিন্ন রকম। তার যখন মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর আযাবের সুসংবাদ (!) দেয়া হয়।”-সহীহ আল বুখারী।

যিনি আখিরাতে বিশ্বাসী তিনি সারাজীবন মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। তাঁর কাছে মৃত্যু হলো আখিরাতের চূড়ান্ত পরীক্ষার সূচনা।  আল্লাহ দুনিয়ার জীবন দিয়েছেন দুনিয়ার সব কিছু আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ভোগ করার জন্য। আর একজন মানুষ আল্লাহর নির্দেশ মেনে এসব জিনিস কতটুকু ভোগ করেছে তা পরীক্ষা করার জন্য মৃত্যু দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি সূরা মুলকের ২নং আয়াতে বলেন, ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদের পরীক্ষা করেন, কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ’। অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে পরীক্ষা করার জন্যই জীবন ও মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন। মৃত্যু না থাকলে মানুষ যা ইচ্ছা তাই করতো। যে ব্যক্তি মৃত্যুকে বেশী বেশী স্মরণ করবে সে দুনিয়াতে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে। ‘মৃত্যু চিন্তা’ দুনিয়াতে মানুষকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে কেন দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন? কেন আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তা তিনি সূরা আয-যারিয়াতের ৫৬ নং আয়াতে স্পষ্টভাবে বলেছেন, “আমি মানুষ ও জিন জাতিকে শুধু আমার ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছি।” তাই যারা প্রকৃত বুদ্ধিমান তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে জীবনকে পরিচালিত করেন। শুধুমাত্র দুনিয়ার সুখ-শান্তি ও ভোগ-বিলাসের পেছনে ছুটে চলেন না। আল্লাহ আমাদেরকে তার কৃতজ্ঞ বান্দাদের মধ্যে শামিল করুন।

দুনিয়া ও আখেরাতের অভিভাবক মহান আল্লাহ যেন ইসলামের আদর্শের ওপর মৃত্যু দান করেন এবং আমাদের প্রাণ মুসলমান অবস্থায় বের করেন। মৃত্যুর পর আমাদের আমলনামা ইল্লিয়্যীনে রাখেন। মৃত্যুর সময় আমাদের কানে প্রতিধ্বনিত হয় কুরআনের আয়াত, “হে প্রশান্ত আত্মা, তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে যাও সন্তুষ্ট চিত্তে ও সন্তোষভাজন হয়ে। অত:পর আমার বান্দাদের মধ্যে শামিল হয়ে যাও। আর প্রবেশ কর আমার জান্নাতে”। সূরা আল-ফাজর, ২৭-৩০।

লেখক: উপ মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানব সম্পদ), আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশন।