আশুলিয়ার জামগড়ার দীর্ঘ জলাবদ্ধতা,জনজীবন বিপর্যস্ত

আশুলিয়ার জামগড়ার দীর্ঘ জলাবদ্ধতা,জনজীবন বিপর্যস্ত

ছবি: সাভার প্রতিনিধি

 আশুলিয়ার লাইফলাইন বলে খ্যাত জামগড়া মহাসড়কটি সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় হাঁটুসম পানিতে। ড্যানেজ অব্যস্থাপনা ও মহাসড়কের লেন সংকুচিত হওয়ায় সৃষ্ট হয় জলাবদ্ধতার। এই জলাবদ্ধতার ফলে তৈরি হয় তীব্র যানজটের। যা এখন এ অঞ্চলের মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ,নয়নজুলি খাল অবৈধভাবে ভরাট ও দখল হওয়ার কারণেই ঘটছে এই অসহনীয় জনদুর্ভোগ। বারবার উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাঘববোয়ালদের সম্পৃক্ততায় ধ্বংস হচ্ছে খালটি বলেও মনে করেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিক স্ট্যান্ডের এক ব্যবসায়ী রিপোর্টারকে হতাশার সুরে ব্যঙ্গ করে বলেন, রিপোর্ট করে কি হবে? কম জল তো ঘোলা হয়নি এই পর্যন্ত? দিতে পেরেছেন কোনো সমাধান?
এক পর্যায়ে তিনি বলেন, সপ্তাহের ৪/৫ দিনই থাকে এই হাল। গাড়ির চাকা

র কারনে সৃষ্ট ঢেউ তার দোকানে পর্যন্ত ঢুকে যায়। অতীতে একদিনেই দোকানের প্রায় ৪০ হাজার টাকার মালামাল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। পরবর্তীতে আপাতত ব্যবস্থা হিসেবে মাচার ব্যারিকেড ব্যবহার করে স্রোতের তীব্রতাকে কিছুটা কমামোন চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে একটু হলেও সফল হয়েছেন তিনি। তারমতো অনেক ব্যবসায়ীই এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আপাততভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তির যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।  

রিকশাচালক জাহিদ ( ৩৫) নামক বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে এলাকায় আছি। প্রতিবার বৃষ্টির পর পরই সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ক্ষতি হচ্ছে আমাদের।  এমতাবস্তায় যাত্রীদের নিয়ে যাতায়াত করাটাই দুরূহ হয়ে পড়ে। রাস্তা ডুবে যাওয়ার কারণে রাস্তার ভাঙ্গা অংশ দেখতে না পারায় মাঝেমধ্যে রিকশা উল্টে যায় আর সেই সাথে নষ্ট হয়ে যায় মালামাল, যার ক্ষতিপূরণও দিতে হয় আমাদের।

রিক্সাযাত্রী রাসেল ( ২৯) বলেন, আলিয়া মাদ্রাসা থেকে জামগড়া সর্বোচ্চ ২০ টাকা ভাড়া হলেও, জলজটের কারনে দিতে হচ্ছে বাড়তি ১০ টাকা।  সেইসাথে যাত্রাবস্থায় মাঝেমধ্যে রাস্তার খাদ দেখতে না পাওয়ায় গাড়ি থেকে পরে দূর্ঘটনা ঘটার রেকর্ডও কম নয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানির স্রোত দোকানের ভিতরে প্রবেশ করায় ফার্নিচারের দোকান সব মালামাল অনত্র সরানো হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে পথচারী যাতায়াতের বিন্দুমাত্র ব্যবস্থাও নেই। রাস্তার পাশ দিয়ে হাটতে গেলে হয় কাঁদাতে পা মেখে যায়, নয়তো গাড়ির চাকায় সৃষ্ট ঢেউয়ে ভিজে যায় পথচারীদের কাপড়। জলাবদ্ধতার কারনে রাস্তার লেন সংকুচিত হওয়ায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় নিত্যদিন। আর একবার যানজটের সৃষ্টি হলে এর রেশ রয়ে যায় মাঝরাত পর্যন্ত। এই জলাবদ্ধতা সাধারণত সরকার মার্কেট থেকে শুরু করে ইউনিক পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগের সৃষ্টি করে। মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি সড়কের অবস্থাটিও একই।

এমতাবস্থায়, কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতার ফলে গাড়ির ইঞ্জিন বিকল হওয়ার মত ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। গাড়ী চলাচলের কারনে সৃষ্ট ঢেউকে অনেকে ব্যঙ্গ করে কক্সবাজারের সাথে তুলনা করতেও ছাড়ছেন না।  আর এভাবেই নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাগন। তবে এলাকাবাসী এই জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ কামনা করেন।