বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে হত্যা করার জন্য - শিক্ষামন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে হত্যা করার জন্য - শিক্ষামন্ত্রী

কুবিতে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি।

"বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিলো বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিকে হত্যা করার জন্য। একাত্তরের পরাজিত শক্তি, দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা এই হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর ঘনিষ্টতম সহযোগীদের হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অন্ধকারযুগে ফিরিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছিলো।"

শনিবার (২৯ আগস্ট) বিকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) কর্তৃক আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা সেইসময় দেখেছি দল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যবস্থা, নির্বাচনী ব্যবস্থা সমস্ত কিছুকে তখন ধ্বংস করা হয়েছিল। এই বাংলাদেশটি মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছিলো। সমস্ত হত্যা, ষড়যন্ত্র এই নিয়ে যে অপরাজনীতি, সেটি চলেছে দীর্ঘসময়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের চার নীতিকে ধারণ করে আমরা এগিয়ে চলছি। আমাদের এই চলার পথে সবসময় সজাগ থাকতে হবে। কারণ ষড়যন্ত্রকারীরাই একাত্তরের হত্যাকারী, তারাই আবার পচাত্তরের হত্যাকারী। এই হত্যাকারীরা বারবার ছোবল হেনেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যা করার জন্য তারা অন্তত ২১ বার চেষ্টা চালিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনার সময়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রমে সম্পৃক্ত রাখা, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের দায়িত্ব রয়েছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে  হবে। যেসকল বিশ্ববিদ্যালয় এখনো অনলাইনে তাদের পাঠদান শুরু করেনি তাদের সবাইকে অনতিবিলম্বে সকল ক্লাস অনলাইনে পাঠদান শুরু করতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
  
তিনি আরও বলেন, অনলাইনে ক্লাসের জন্য আমরা যে অ্যাপ চালু করেছি তা অনেকে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে ব্যবহার করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ডিভাইসসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারে। 

এসময় শিক্ষামন্ত্রী গ্রাম, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে যেসকল শিক্ষার্থী ইন্টারনেট সমস্যায় আছেন তাদের নিকটস্থ সরকারিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে সেবা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া সরকারের পক্ষ হতে সাশ্রয়ী মূল্যে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট প্যাকেজ দেওয়ার জন্য টেলিকোম্পানির সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান।

সভায় বিশেষ অতিথি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন তা আজ বিশ্ব সমাদৃত। মূলত আমাদের এসডিজির যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনারই অংশ ছিল।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। যাদের অর্থনৈতিক, ইন্টারনেট এবং ডিভাইস সমস্যা রয়েছে তা খুব শীঘ্রই সমাধান করব। এ সময় সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান।  

রেজিস্টার ড. মো. আবু তাহেরের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ রশিদুল ইসলাস শেখ, প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ।