খাশোগি হত্যার পর যুবরাজকে রক্ষা করেন ট্রাম্প

খাশোগি হত্যার পর যুবরাজকে রক্ষা করেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে রক্ষা করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অনুসন্ধানী সাংবাদিক বব উডওয়ার্ডের প্রকাশিতব্য নতুন বইয়ে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বইটির একটি কপি হাতে পেয়েছে বিজনেস ইনসাইডার। মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি গত বৃহস্পতিবার এক খবরে জানিয়েছে, বইটিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প দাবি করেন খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া থেকে সৌদি যুবরাজকে তিনিই রা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিজের বিয়ের কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে প্রবেশের পর নিহত হন। অভিযোগ ওঠে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে সৌদি কর্মকর্তারা তাকে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলে। বিশ্বজুড়ে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা শুরু হয়। তাতে শামিল হয় যুক্তরাষ্ট্রের উভয় দলের আইনপ্রণেতারা।

সেই পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বব উডওয়ার্ডকে দেয়া সাাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কংগ্রেসের হাত থেকে তাকে (সৌদি যুবরাজ) রা করতে সম হয়েছিলাম। আমি তাদের থামাতে সম হই।’ ট্রাম্প বলেন, সৌদি যুবরাজ খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন বলে বিশ্বাস করেন না তিনি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে দেখা গেছে হত্যাকাণ্ডটির নির্দেশনা সৌদি যুবরাজই দিয়েছিলেন।

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর উভয় দলের আইনপ্রণেতাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার মধ্যে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে ট্রাম্প সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ৮০০ কোটি ডলারের পেণাস্ত্রসহ অন্যান্য অত্যাধুনিক অস্ত্র বিক্রি অনুমোদন করেন। ওই অস্ত্র বিক্রি ঠেকাতে কংগ্রেস তিনটি প্রস্তাব পাস করলেও সেগুলোতে ভেটো মতা প্রয়োগ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্রকাশিতব্য বইটির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৮টি সাাৎকার নিয়েছেন বব উডওয়ার্ড। তাকে করা ট্রাম্পের কিছু বক্তব্যের অডিও রেকর্ড গত বুধবার প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর জেরে করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে দেশটিতে নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বব উডওয়ার্ড তার বইতে লিখেছেন, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামে যোগ দিয়ে ফিরে আসার কয়েক দিনের মধ্যে ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি তাকে ডেকে পাঠান ট্রাম্প। ওই সময়ের আলোচনায় খাশোগির নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রেসিডেন্টকে চাপ দেন উডওয়ার্ড। সৌদি এজেন্টদের একটি দল ইস্তানবুল কনসুলেটে জামাল খাশোগিকে হত্যা করে তার লাশ টুকরো টুকরো করে ফেলে। ওই কনসুলেটের এক কর্মী তুরস্কের আদালতে গত ৩ জুলাই জানিয়েছেন, খাশোগি কনসুলেট ভবনে প্রবেশের এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তাকে চুলা জ্বালাতে বলা হয়। 

তুর্কি আদালতে সৌদি আরবের ২০ কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে তাদের বিচারকাজ চলছে। এ দিকে গত সোমবার সৌদি আরবের একটি আদালত খাশোগি হত্যাকাণ্ডে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।

সূত্র : আলজাজিরা