পাবনা-৪ আসনে উপনির্বাচন বাতিল করে পুন:নির্বাচন চান বিএনপি প্রার্থী

পাবনা-৪ আসনে উপনির্বাচন বাতিল করে পুন:নির্বাচন চান বিএনপি প্রার্থী

ছবি:সংগৃহীত

 

অনিয়মের অভিযোগ তুলে পাবনা-৪ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা দিকে  ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান।

হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সুষ্ঠু ভোট হবে এবং কাউকে হয়রানি করা হবে না। কিন্তু তারা সেই কথা রাখেনি। কোনো কেন্দ্রে আমরা এজেন্ট দিতে পারিনি। আমাদের কর্মী-সমর্থক- ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের কর্মীরা যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাংচুর, গুলি ও অগ্নিসংযোগ করে বিএনপির উপর দোষ চাপায়। এব্যাপারে বিএনপির ২৮ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা করে। তাই গ্রেপ্তারের ভয়ে আমাদের কর্মীরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। তিনি আরো অভিযোগ বরেন, নির্বাচন কমিশন বলেছিল ব্যালট পেপার সকালে পৌঁছাবে; কিন্তু তা করা হয়নি। রাতে নিয়ে এসে ব্যালট বাক্স ভরা হয়েছে। তাই এই প্রহসনমূলক নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন বর্জন করিনি। নির্বাচন বর্জন করার প্রশ্নই আসে না। এটা কোনো নির্বাচনই হচ্ছে না। আমি চাই, নির্বাচন কমিশন নতুন করে তফসিল ঘোষণা করে আবারও ভোটগ্রহণ করবে।’

অপরদিকে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর তোলা অনিয়মের অভিযোগের যৌক্তিতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল। শনিবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এস এম কামাল বলেন, বিএনপি প্রার্থী নির্বাচন করার জন্য আসেননি। তিনি এসেছেন নির্বাচন বাণিজ্য করার জন্য। ভোটের মাঠে তার কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। বিএনপি যেসব অভিযোগ তুলেছে, সুনির্দিষ্ট করে তারা একটি ঘটনাও দেখাতে পারবে না। বিএনপি’র কোনো কর্মী বা সমর্থক আওয়ামী লীগের দ্বারা ক্ষতির সম্মুখীন হলে তাদের কথার যৌক্তিতা থাকতো। একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র বৈশিষ্ট্য মিথ্যাচার করা। সম্প্রতি সাহাপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই হামলায় বিএনপি জড়িত। যে কারণে তারা এজেন্ট দিতে পারেনি। বিএনপি প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে আসার পথ খুঁজছিলেন। ভোট বাতিল বা বর্জনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

সকাল সোয়া ১০টায় কালিকাপুর আবদুল জব্বার স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় কোন ভোটার নেই। ওই কেন্দ্রের প্রিজাডিং অফিসার মনোজিত কর্মকার  জানান, সকাল ১০টা পর্যন্ত  ২,৪৫৭ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৩০টি ভোট পড়েছে।

সাহাপুর শহীদ আবুল কাসেম বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জিলহাজ উদ্দিন বলন, ‘আমার কেন্দ্রে মোট ভোটার তিন হাজার ৩১৮ জন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১০ পারছেন্ট ভোট পড়েছে।’

বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে বিএনপি’র কোনো এজেন্ট দেখা যায়নি। ভোটারের উপস্থিতি কোন কোন কেন্দ্রে একেবারেই ছিল না; আবার কোনটিতে ছিল সামান্য ভোটার

এর আগে পাবনা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল লতিফ বলেছিলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে সব প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটারদের আস্থা অর্জনে তাদের ভোট কেন্দ্রে যেতে উদ্বুদ্ধকরণে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ভোটারদের উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে।

গত ২ এপ্রিল পাবনা-৪ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু মৃত্যু বরণ করেন। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২৬ সেপ্টেম্বর ছিল নির্বাচন।