জিহ্বার রং দেখে বুঝে নিন স্বাস্থ্যের অবস্থা

২১ অক্টোবর, ২০২৪

ভাইরাস জ্বর হোক কিংবা পেট ব্যথা— চিকিৎসকদের কাছে গেলেই তাঁরা সবার আগে রোগীর জিহ্বার দেখতে চান। খাবারের স্বাদ কেমন তা বুঝতে যেমন জিহ্বার উপরেই ভরসা রাখতে হয়, তেমনই শরীর অবস্থা বুঝতেও কাজে আসে এই অঙ্গ।

জিহ্বার স্বাভাবিক হালকা গোলাপি রং বদলে গেলে তা বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময়ে জিহ্বার উপর সাদাটে আস্তরণ পড়তে দেখা যায়। চিকিৎসকদের মতে, মুখের স্বাস্থ্যের সঠিক খেয়াল না রাখলে জিহ্বার উপর সাদা আস্তরণ পড়ে। ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকের আক্রমণে এমনটা হতে পারে। শরীরে পানির ঘাটতি হলেও জিহ্বা সাদা হয়ে যায়। নিয়মিত ধূমপান করলেও কিন্তু জিহ্বার উপর সাদা স্তর পড়ে। এ ছাড়া কিছু রোগের ক্ষেত্রেও জিহ্বা দেখেই যাচাই করেন চিকিৎসকেরা। জেনে নিন কখন সাবধান হবেন।

মুখের ভিতরেই ‘ক্যান্ডিডা ইস্ট’নামের এক প্রকার ছত্রাক থাকে। এই ছত্রাকটি মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলেও জিহ্বা সাদাটে আস্তরণ তৈরি হতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলে ওরাল থ্রাশ। সাধারণত এটি গুরুতর সমস্যা না হলেও ওরাল থ্রাশ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই এই সমস্যার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে কোনও গভীর সমস্যাও।

লিউকোপ্লাকিয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। নামটি কঠিন হলেও সমস্যাটি সাধারণত খুব একটা উদ্বেগের নয়। জিহ্বা বা মুখগহ্বরের উপরের ত্বকের কোষের অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। এই কোষগুলি কেরাটিন নামের একটি প্রোটিনের সঙ্গে মিশে জিহ্বায় একটি সাদা আস্তরণ তৈরি করে। সাধারণত নিজে থেকে সেরে গেলেও কখনও কখনও লিউকোপ্লাকিয়া থেকে মুখের ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে। তাই সময় থাকতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।

সিফিলিস একটি যৌনরোগ। জিহ্বার সাদা রঙের আস্তরণ এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। সাধারণত অসুরক্ষিত যৌন মিলনের মধ্য দিয়ে এই রোগের ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। সময় মতো চিকিৎসা না হলে এই রোগ মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তাই জিহ্বার এই ধরনের কোনও সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে।

জিহ্বাররং হঠাৎ নীলচে বা বেগুনি হয়ে গেলে বুঝতে হবে শরীরে অক্সিজেনের অভাব হচ্ছে। এ ছাড়া, শ্বাসযন্ত্র কিংবা কার্ডিয়োভাসকুলার কোনও সমস্যা থাকলেও জিহ্বার রং নীল হয়ে যেতে পারে।

জিহ্বার রং একেবারে ফ্যাকাসে হয়ে গেলে তা রক্তে আয়রনের অভাবকেই ইঙ্গিত করে। আবার জিহ্বার উপর লাল এবং সাদা চাকা চাকা দাগ অটোইমিউন রোগের ইঙ্গিতও বহন করে।