নির্মমভাবে হত্যার পর পরিচয় গোপন করতে ‘আঙুল’ কেটে ফেলে তারা

২৮ অক্টোবর, ২০২৪

গাজীপুর মহানগরীর সামালন্তপুর এলাকায় মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে এক যুবককে শ্বাসরোধে হত্যার পর পরিচয় গোপন করতে আঙুল কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। নিহত নাঈম মাঝি (২৪) নামে ওই যুবকের মরদেহ ধানক্ষেতে পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় মূলহোতা ওয়াই.এম.ওয়াই. সিদ্দীকি শিবলীকে (৩০) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১ এর একটি বিশেষ দল।  বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার ও মিডিয়া অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান।

র‍্যাব-১ এর সূত্র জানায়, গত ১৪ অক্টোবর রাতে শিবলী ও তার সহযোগীরা সামালন্তপুর এলাকার রেললাইন থেকে নাঈমকে অপহরণ করে। পরে তাকে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটকে রেখে নাঈমের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মুক্তিপণ না পাওয়ায় তারা নাঈমকে বেধড়ক নির্যাতন করে। এরপর শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার পরিচয় গোপন করতে আঙুল কেটে ধানক্ষেতে মরদেহ ফেলে দেয়।

পরদিন ১৫ অক্টোবর সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে নাঈমের মরদেহ উদ্ধার করে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। হত্যাকাণ্ডের পর নিহত নাঈমের পরিবারের পক্ষে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকেই র‍্যাব-১ হত্যাকাণ্ডের ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং শিবলীকে গ্রেফতারের জন্য একাধিক স্থানে অভিযান চালায়। অবশেষে গতকাল সন্ধ্যায় শিবলীকে রাজধানীর একটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিবলী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, শিবলী এবং তার সহযোগীরা নাঈমকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল। মুক্তিপণ না পেয়ে নাঈমকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়। শিবলীর স্বীকারোক্তি থেকে হত্যাকাণ্ডের পুরো বিবরণ উঠে এসেছে।

তিনি আরও জানান, নাঈমকে হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিপণের টাকা আদায় করা। শিবলীর নেতৃত্বে একটি অপরাধী চক্র দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধে জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করছে র‍্যাব। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।

নাঈম মাঝির পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে এ ঘটনায় শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে সব অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।