বিয়ের কত দিনের মধ্যে মোহরানা পরিশোধ করা উত্তম

০৫ নভেম্বর, ২০২৪

মোহরানা স্ত্রীর সম্মানের প্রতীক এবং স্ত্রীর একচ্ছত্র অধিকার।  বিয়ে বৈধ সাব্যস্ত হওয়ার জন্য মোহর পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক। আল্লাহ তাআলা বলেন- وَ اٰتُوا النِّسَآءَ صَدُقٰتِهِنَّ نِحۡلَۃً ؕ فَاِنۡ طِبۡنَ لَکُمۡ عَنۡ شَیۡءٍ مِّنۡهُ نَفۡسًا فَکُلُوۡهُ هَنِیۡٓــًٔا مَّرِیۡٓــًٔا ‘তোমরা নারীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশিমনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় সাগ্রহে ছেড়ে দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য, তাহলে তা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ করো।’ (সুরা নিসা: ৪)

মুমিনের কর্তব্য খুশিমনে স্ত্রীর মোহর আদায় করা। তবে, স্ত্রী যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মোহরের কিছু অংশ ছেড়ে দেয় কিংবা গ্রহণ করার পর স্বামীকে উপহার দেয় তাহলে স্বামী তা ভোগ করতে পারবে। 

মোহরানা পরিশোধের সময় সম্পর্কে ইসলামি আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিয়ের আগে দেনমোহর ধার্যের পর তা পরিশোধের উত্তম সময় হচ্ছে—বাসর রাতে (সহবাসের পূর্বে) ওই দেনমোহর পরিশোধ করে দেওয়া। যদিও নগদ অর্থ না থাকলে পরে পরিশোধ করার অবকাশ রয়েছে। মোহর বাকি রাখলে বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবে না। (মাবসুতুস সারাখসি: ৫/৬২; আল মুজামুল আওসাত: ২/২৩৭)

তবে, কেউ মোহর না দেওয়ার নিয়ত করে থাকলে তাকে পরকালে জেনাকারীর কাতারে দাঁড়াতে হবে। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (স.) সতর্ক করে বলেন, যে ব্যক্তি মোহরের বিনিময়ে কোনো মহিলাকে বিবাহ করল, অথচ মোহর পরিশোধ করবে না বলে নিয়ত করল, সে জেনাকারী।’ (বায়হাকি শুআবুল ঈমান: ৫৫৪৯; বাজজার: ৮৭২১; সহিহুত-তারগিব: ১৮০৬)

মোহর মাফ করিয়ে নেওয়ার জন্য কোনোরকম কৌশল অবলম্বন করা, স্ত্রীকে লজ্জায় ফেলে দিয়ে মোহর মাফের স্বীকারোক্তি নেওয়া নাজায়েজ। ফতোয়ার কিতাবে এসেছে, স্বামী যদি চাপ দিয়ে বা কৌশলে পূর্ণ মোহর বা কিছু অংশ মাফ করিয়ে নেয়, তাহলে আল্লাহর বিচারে তা মাফ হবে না। (আহকামুল কোরআন, জাসসাস: ২/৫৭-৫৮; তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/৪৪২; বয়ানুল কোরআন: ২/৯৩; তাফসিরে উসমানি, পৃষ্ঠা: ১০০)

প্রসঙ্গত, মোহরের টাকা স্ত্রীর হাতে হাতে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন আলেমরা। কেননা হাতে না দিয়ে স্ত্রীর অন্তরের সন্তুষ্টি বোঝা মুশকিল। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে স্ত্রীর অধিকারের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার তাওফিক দান করুন। স্ত্রীর মোহর পরিশোধ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

(তথ্যসূত্র: মারেফুল কোরআন: ২/২১৯; হেদায়া: ২/৩২৫; ফতোয়ায়ে রাহমানিয়া: ২/৮৮, আহকামুল কোরআন, জাসসাস: ২/৫৭-৫৮; ইবনে কাসির: ১/৪৪২; বয়ানুল কোরআন: ২/৯৩; তাফসিরে উসমানি, পৃ-১০০)