০৬ নভেম্বর, ২০২৪
নিজেদের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোট দিচ্ছেন মার্কিন জনগণ। এরই মধ্যে ৫০টি অঙ্গরাজ্যের বেশির ভাগ রাজ্যে ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হয়ে গেছে গণনা। কয়েকটি রাজ্যে বুথ বন্ধ হয়ে যাবে আর কয়েক ঘণ্টা বাদেই। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত বুথফেরত জরিপ থেকে দেখা যাচ্ছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পকে ভালোই টক্কর দিচ্ছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা। বড় স্টেটগুলোতে জিতে হোয়াইট হাউস পুনরুদ্ধারের দৌঁড়ে থাকা ট্রাম্পের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন ডেমোক্র্যাটদের নারী কাণ্ডারি। যদিও সার্বিক চিত্র বলছে, শেষ পর্যন্ত হতাশই হতে হবে তাকে।
যাই হোক, এখন পর্যন্ত পাওয়া আপডেট অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেকটোরাল ভোটের বিপরীতে এখন পর্যন্ত ২৪৮ ভোট পেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এখন পেয়েছেন ২১৪টি ভোট।
পরিসংখ্যান বলছে, বেশির ভাগ অঙ্গরাজ্যেই ট্রাম্পের জয়-জয়কার। তবে, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের মতো বড় কয়েকটি রাজ্যে জিতে ইলেকটোরাল ভোটের ব্যবধান বেশ কমিয়ে এনেছেন কমলা।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে মোট ৫১৪টি ইলেকটোরাল ভোট আছে, যেখানে এখনও ৫৩টি ভোটের হিসাব বাকি। আপাতদৃষ্টিতে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্যই হোয়াইট হাউজের দুয়ার এখনও খোলা মনে হলেও বাস্তবে এবার ব্যবধান গড়ে দিতে যাচ্ছে সাত সুইং স্টেটের ৯৩টি ইলেকটোরাল ভোট, যেখানে এরই মধ্যে নর্থ ক্যারোলিনা ও জর্জিয়ার ৩২টি ভোট দখলে নিয়ে নিয়েছেন ট্রাম্প।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের আপডেট দেখাচ্ছে, সুইং স্টেট খ্যাত পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও উইসকনসিনে ভালোভাবেই এগিয়ে আছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। স্টেটগুলোর সবশেষ বুথফেরত জরিপ তার জয়ের আভাসই দিচ্ছে। মোট ৩৪টি ইলেকটোরাল ভোট স্টেট তিনটিতে। এর মধ্যে পেনসিলভানিয়াতে ১৯টি, মিশিগানে ১৫ এবং উইসকনসিনে ১০টি ইলেকটোরাল ভোট আছে। এ ছাড়া জর্জিয়াতেও জয়ের সুবাস পাচ্ছেন ট্রাম্প। ১৬টি ইলেকটোরাল ভোট আছে এ স্টেটটিতে। অন্য দুই সুইং স্টেট অ্যারিজোনা ও নেভাদায় ভোটগ্রহণ শেষ হতে এখনও অনেকখানি সময় বাকি। যথাক্রমে ১১টি ও ৬টি ইলেকটোরাল ভোট আছে স্টেট দুটিতে।
এনবিসির জরিপে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ শতাংশ ভোটার অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ওপরই আস্থা রাখছেন। যেখানে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করছেন ৪৭ শতাংশ ভোটার। একই জরিপ অনুযায়ী আবার ৭২ শতাংশ ভোটার দেশের অবস্থা নিয়ে ‘অসন্তুষ্ট’।
মূলত, বাইডেনের চার বছরের শাসনামলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মসংস্থানের সংকট সৃষ্টির পাশাপাশি অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে পড়ে গেছে জীবনযাত্রার মান। অন্যদিকে, বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও অভ্যন্তরীণ কিছু নীতির কারণেও সেখানকার মুসলমান নাগরিকরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন ডেমোক্র্যাটদের প্রতি। বাইডেন প্রশাসনের বিগত দিনের ভুলগুলোর খেসারতই কমলাকে দিতে হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।