০৬ নভেম্বর, ২০২৪
মুসাফাহা শব্দের অর্থ হাত মেলানো। পরিভাষায় পারস্পরিক সাক্ষাতে সালাম বিনিময়ের পর একে অপরের সঙ্গে হাত মেলানোকে মুসাফাহা বলা হয়। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে এভাবে হাত মেলানোর প্রচলন রয়েছে। ইসলামে পারস্পরিক সাক্ষাতে মুসাফাহা একটি সুন্নত আমল। নবিজি (সা.) নিজে মুসাফাহা করতেন অন্যদেরও মুসাফাহা করার নির্দেশ দিতেন। আনাস (রা.) বলেন,
এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ তার ভাইয়ের সাথে বা বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করলে তার সামনে কি মাথা নত করবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে কি তাকে জড়িয়ে ধরে চুমো খাবে? তিনি বললেন, না। সে বলল, তাহলে কি তার হাত ধরে তার সঙ্গে মুসাফাহা করবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (সুনানে তিরমিজি: ২৭২৮)
মুসাফাহার পর বুকে হাত দেওয়ার বিষয়টি নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বা সাহাবায়ে কেরাম থেকে পাওয়া যায় না। তাই সালাম ও মুসাফাহার পর বুকে হাত দেওয়া সুন্নত বা মুস্তাহাব নয়। সুন্নত বা মুস্তাহাব মনে করে কেউ এমনটি করলে তা বিদআত বলে গণ্য হবে।
তবে কেউ যদি এটাকে সুন্নত বা মুস্তাহাব মনে না করে, বরং আঞ্চলিক রীতি অনুসারে শুধুমাত্র ভালোবাসা বা শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য এমন করে, তবে তাতে সমস্যা নেই।
মুসাফাহার হাত মেলানোর পাশাপাশি আল্লাহর প্রশংসা ও পরস্পরের জন্য দোয়া করাও মুসাফাহার অংশ ও সুন্নত। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
যখন দুইজন মুসলিমের সাক্ষাত হয় এবং তারা একে অপরের সঙ্গে মুসাফাহা করে, আল্লাহ তাআলার হামদ ও শোকর করে এবং আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করে, তখন আল্লাহ তাআলা উভয়কে ক্ষমা করে দেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৬৯)
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
যখনই দুজন মুসলিমের সাক্ষাত হয় এবং তারা পরস্পর হাত মিলায় আল্লাহ তাআলার ওপর তাদের এই হক জন্মে যে, আল্লাহ তাদের দুআ কবুল করবেন এবং তাদের হাতগুলো পৃথক হওয়ার আগেই তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। (মুসনাদে আহমদ: ১২৪৫১)