০৯ নভেম্বর, ২০২৪
সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ফের উত্তপ্ত ভারতের মণিপুর। সেখানে শস্ত্র চরমপন্থিরা একজন আদিবাসী নারীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর রেশ ধরে বৃহস্পতিবার রাতে মণিপুরের জিরিবাম জেলায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত ওই নারীকে প্রথমে গুলি করা হয়, পরে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। যার জেরে ফের আরেকবার অশান্ত উঠেছে মণিপুর।
হামার উপজাতীয় গ্রাম জাইরাউনে এই সহিংস ঘটনাটি ঘটেছে। হামার জাতিগতভাবে কুকি-জো লোকদের সঙ্গে সম্পর্কিত, যারা ২০২৩ সালের ৩ মে থেকে রাজ্যের মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ঘটনার দিন রাত ৯টার দিকে জেলা সদর দপ্তর জিরিবাম থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। প্রায় একঘণ্টা ধরে বন্দুকযুদ্ধ চলে।
ওই নারীর স্বামী নুগুরথানসাং জানান, জোসাংকিমের উরুতে একটি বুলেট লেগেছিল। জোসাংকিম স্থানীয় হারমন ডিউ ইংলিশ জুনিয়র হাই স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন।
আইটিএলএফ জানিয়েছে, আততায়ীরা নুগুরথানসাং-এর বৃদ্ধ বাবা-মা এবং চার থেকে আট বছর বয়সী তিন সন্তানকে চলে যেতে দিলেও তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিতে অস্বীকার করে। শুক্রবার সকালে ওই নারীর পোড়া মরদেহ বাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। হামলাকারীরা কয়েকটি কুকুরকেও মেরে ফেলে এবং সাতটি দুই চাকার গাড়ি নিয়ে যায়।
হামলার সময় ১৭টি বাড়ি ও তিনটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়। একজন সিনিয়র অফিসার বলেছেন- ‘বন্দুকযুদ্ধ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে’। তবে আমাদের কাছে হামলায় কোনো মৃত্যুর খবর নেই। আমরা খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত করছি।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের একটি ভিডিওতে, কিছু নারীকে জোসাংকিম হামারের ‘পুড়ে যাওয়া দেহাবশেষ’ বহন করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিশ্চিত করতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল গ্রামে পাঠানো হয়েছে। মণিপুরের জাতিগত সহিংসতার জেরে ২০২৩ সালের মে থেকে এখন পর্যন্ত ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কমপক্ষে ৬০ হাজার জনকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে।
(সূত্র: দ্য হিন্দু)