সুস্থ থাকতে হাঁটুন ৬-৬-৬ নিয়মে, রোগ-বালাই থাকবে দূরে

০৯ নভেম্বর, ২০২৪

সুস্থ থাকতে হাঁটার বিকল্প নেই। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় হাঁটা, শরীরচর্চা করা আর পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি রোগব্যাধি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারে। কিন্তু হাঁটা নিয়ে মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। এই যেমন কখন হাঁটা উচিত, সকালে না বিকেলে? কত সময় হাঁটা উচিত? এসব নিয়ে নানা জনের নানা মত। 

বিশেষজ্ঞদের মতে সুস্থ থাকতে হাঁটার ক্ষেত্রে ৬-৬-৬ পদ্ধতি বা নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন। কী সেই নিয়ম? চলুন জেনে নিই- 

৬-৬-৬ পদ্ধতি কী? 
এই নিয়মে সকাল ছ’টা এবং সন্ধ্যা ছ’টায় হাঁটতে হবে মোট ৬০ মিনিট। ৬ মিনিট বরাদ্দ থাকবে গা গরম (ওয়ার্ম আপ) এবং ৬ মিনিট বিশ্রামের জন্য।

শুরু করুন সকালেই
এই নিয়মের সুফল পেতে সকাল ছ’টায় হাঁটতে বের হতে হবে। কেন এই সময়ে? কারণ এসময়ে রোদের তাপ তেমন একটা বেশি থাকে না, তেমনি পরিবেশ থাকে শান্ত। বাইরের আলো-বাতাস মন ও শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে। 

অস্ট্রেলিয়ার হার্ট ফাউন্ডেশন (ওয়াকিং)-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, দিনে ৩০ মিনিট হাঁটলে হৃদরোগের সমস্যা ৩৫ শতাংশ কমে যায়। দ্য ইউরোপিয়ান সোসাইটি অফ কার্ডিওলোজির সমীক্ষা অনুযায়ী, সকালে হাঁটলে স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে। পাশাপাশি, মন থাকে ফুরফুরে। এছাড়া, সকালে ওঠার অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।

হাঁটতে হবে সন্ধ্যায়ও 
সকালে ৩০ মিনিট হাঁটার পর সন্ধ্যায় হাঁটতে হবে আরও ৩০ মিনিট। ৬-৬-৬ পদ্ধতির দ্বিতীয় শর্ত এটি। সূর্যাস্তের পরের এই সময়টিতেও মন শান্ত থাকে। পরিবেশও থাকে সুন্দর। আর সারাদিন কাজের পর সন্ধ্যায় হাঁটহাঁটি করলে মন আর শরীরের ক্লান্তি দূর হয়। তবে এসময় ৩০ মিনিট হাঁটা সম্ভব না হলে, ২ মিনিটের দ্রুত হাঁটাও কার্যকর হতে পারে। অফিস চত্বরেই অন্তত মিনিট দুয়েক হেঁটে নিন। 

৬০ মিনিট হাঁটা
কেবল সুস্থ থাকতে নয়, জন কমাতেও হাঁটা উপকারি। হাঁটলে শক্তিক্ষয় হয়। শরীরের অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরি বেরিয়ে যায়। সপ্তাহে ৫ দিন ৬০ মিনিট করে হাঁটলেই ওজন কমানো সম্ভব হবে। তবে ধীরেসুস্থে নয়, হাঁটতে হবে দ্রুত গতিতে। সেসঙ্গে খেতেও হবে পরিমাণমতো। 

৬ মিনিটে আর কোন কাজটি করতে হবে? 
৬-৬-৬ পদ্ধতিতে ৬ মিনিট গা গরম বা ওয়ার্ম আপের জন্য বরাদ্দ। আমেরিকার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, ওয়ার্ম আপের ফলে শরীরে যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় তা হিমোগ্লোবিন এবং মায়োগ্লোবিন থেকে অক্সিজেনকে আলাদা করতে সাহায্য করে। এতে মাংসপেশি এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বাড়তি অক্সিজেন পৌঁছায়। পেশির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়, স্নায়ুগুলোও চাঙ্গা হয়ে ওঠে। পাশাপাশি, আচমকা পেশিতে আঘাত লাগার ঝুঁকিও কমে। তাই ৬ মিনিট ওয়ার্ম আপ বা গা গরম করে হাঁটাহাঁটি শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এই নিয়মে। 

৬ মিনিট বিশ্রাম
যেকোনো শরীরচর্চা করলেই হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পায়। দ্রুত হাঁটলেও এমনটা হয়। তাই মাঝেমধ্যে হার্টসহ শরীরকে বিশ্রাম দিতে হয়। এক্ষেত্রে বেশ কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটির পর ৬ মিনিট করে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

হাঁটাহাঁটির ৬-৬-৬ নিয়মটি মানলে সুস্থ থাকা, ওজন বশে রাখা, মানসিক ভাবেও চনমনে থাকা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর এই অভ্যাস তৈরি হলে শারীরিক অনেক সমস্যাই কমে যেতে পারে।