মৃগীরোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা

১০ নভেম্বর, ২০২৪

মস্তিষ্কের একটি কঠিন রোগ হলো মৃগী। এই রোগে আক্রান্ত হলে মানুষকে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। মৃগী রোগীর জীবনে কিছু কাজে নিষেধ থাকে। যখন আক্রমণের মাত্রা বেশি হয়, তখন কিছু কাজ ভুলেও করা যাবে না। মৃগী একটি অত্যন্ত গুরুতর রোগ। এ রোগ থাকলে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। বিরত থাকতে হবে কিছু কাজ করা থেকে। তবেই তারা (রোগী) নিজেকে বাঁচাতে পারবেন। রোগী যদি নিজের খেয়াল রাখতে না পারেন, তাহলে তাকে অনেক বিপদে পড়তে হয়। আন্তর্জাতিক মৃগী দিবসের আগে তাই এ বিষয়টা জানা জরুরি।
মৃগী কী?

মৃগীর ইংরেজি প্রতিশব্দ (Epilepsy)। এটি নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়বিক রোগ, যাতে খিঁচুনি হয়। আমাদের মস্তিষ্কে সবসময় ইলেকট্রিক্যাল প্রবাহ চলছে। এই প্রবাহ কোনো সময় বেড়ে গেলে মস্তিষ্কে সমস্যা হয়। এ পরিস্থিতিতে শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ শরীরে দেখা যায়। এর নামই মৃগী। এ রোগের প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও মস্তিষ্কে আঘাত,স্ট্রোক, মস্তিষ্কে টিউমার বা সংক্রমণ, জন্মগত ত্রুটি প্রভৃতিকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই রোগটি যেকোনো বয়সে হতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছোট বয়সে বা ৬০ বছরের পর মানুষ এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই সচেতন থাকাটা জরুরি।

মৃগী রোগের লক্ষণ:
অহেতুক কাঁপুনি আসে
রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়
শরীর শক্ত হয়ে যায়
হঠাৎ করেই বিশেষ ধরনের স্বাদ, গন্ধ পাওয়া যায়
কাঁপুনি দিয়ে রোগী পড়ে যেতে পারেন
তবে বেশির ভাগ সময় রোগী মনে রাখতেই পারে না যে তার সঙ্গে কী হয়েছিল।
মৃগী থাকলে যা করবেন না

ড্রাইভিং/গাড়ি চালানো:
এনএইচএস ইউকে (যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি সংগঠন) জানিয়েছে, যেকোনো সময় মৃগী আসতে পারে। তাই এ অসুখ থাকলে ড্রাইভিং করা নিয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে। ড্রাইভিংয়ের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, গাড়ি চালানোর সময় রোগীর মৃগী হলে বিপদ নিশ্চিত। এমনকি তা মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

সাঁতার কাটা
শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী ব্যায়ামগুলোর একটি হলো সাঁতার। এ অভ্যাস দেহের ক্যালরি ঝরিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে মৃগী থাকলে কখনোই সাঁতার কাটা যাবে না। কারণ, সাঁতার মৃগী রোগীর জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনতে পারে।

সাইকেল বা বাইক চালানো:
মৃগী রোগীদের সাইকেল বা বাইক চালানোর ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে। কারণ, এটি করতে গিয়ে রোগী ভয়ংকর ঝামেলায় পড়তে পারেন। সাইকেল বা বাইক চালানোর সময় মৃগী আক্রমণ করলে পড়ে গিয়ে হাত, পা কাটা বা ভাঙাসহ মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই মৃগী থাকলে এ কাজটি করা যাবে না। তবে সুস্থ অবস্থায় করা যাবে। মনে রাখবেন, এই রোগের বহু চিকিৎসা রয়েছে। মৃগীর জন্য অ্যান্টিএপিলেপটিক ওষুধ রয়েছে। রোগী বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খেলে এ রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। একবার আক্রমণ কমে গেলে আর চিন্তা নেই। তাই নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নিন। নিয়মিত ওষুধ খান। তাহলেই সুস্থ থাকতে পারবেন।