১১ নভেম্বর, ২০২৪
মৃত্যুর পর আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। জীবিত থাকতে করা আমলের ভিত্তিতেই পরকাল কারো সুখের হবে, কারো দুঃখের। তাই চিরস্থায়ী পরকালকে সাজানোর জন্য সুদৃঢ় ঈমান ও অবিরত আমলের ওপর জীবন পরিচালনা করা কর্তব্য।
প্রকৃত মুমিনরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যকে নিজের ওপর আবশ্যক করে নেন, ফলে মৃত্যুর পর থেকেই সুসংবাদ পেতে থাকেন। তাই মৃত্যুর পর তারা দ্রুত কবরস্থ হওয়ার ইচ্ছাপোষণ করেন।
অন্যদিকে, অহংকারীদের, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর ঔদ্ধত্য পোষণকারীদের আজাব শুরু হয় মৃত্যুর সময় থেকেই। এরপর ভোগ করতে হবে কবরের কঠিন আজাব। তাই তাকে কবরে নেওয়ার সময় তার আফসোসের সীমা থাকে না। চিৎকার করে বলতে থাকে, আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ তোমরা? হাদিসে এসেছে, তার চিৎকার মানুষ ছাড়া সবাই শুনতে পায়। মানুষ শুনলে বেহুঁশ হয়ে যেত। কবরে যন্ত্রণাময় জীবন তার অপেক্ষায় আছে—এই দুশ্চিন্তা থেকেই মূলত বদকাররা কবরের দিকে অগ্রসর হতে চায় না এবং চিৎকার করতে থাকে।
হাদিস শরিফে এসেছে, আবূ সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন- إِذَا وُضِعَتْ الْجِنَازَةُ وَاحْتَمَلَهَا الرِّجَالُ عَلَى أَعْنَاقِهِمْ فَإِنْ كَانَتْ صَالِحَةً قَالَتْ قَدِّمُونِي وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ صَالِحَةٍ قَالَتْ يَا وَيْلَهَا أَيْنَ يَذْهَبُونَ بِهَا يَسْمَعُ صَوْتَهَا كُلُّ شَيْءٍ إِلاَّ الإِنْسَانَ وَلَوْ سَمِعَهُ صَعِقَ ‘লাশ যখন খাটে রাখা হয় এবং লোকে তাকে তাদের কাঁধে বহন করতে শুরু করে, তখন সে যদি নেককার হয় তাহলে বলে, ‘আমাকে নিয়ে অগ্রসর হও।’ আর বদকার হলে বলে, ’হায় হায়! আমাকে তোমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?’ আর তার এই শব্দ মানুষ ছাড়া সকলে শুনতে পায়। মানুষ শুনতে পেলে বেহুশ হয়ে যেত।’ (সহিহ বুখারি: ১২৩৫)
নেককারদের তাড়াতাড়ি প্রতিফল পাওয়ার জায়গায় পৌঁছে দেওয়া এবং বদকারদের আপদ হিসেবে দ্রুত বিদায় করার জন্য লাশ দ্রুত দাফন করতে বলেছেন নবীজি। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে নবী (স.) বলেন, তোমরা জানাজা নিয়ে দ্রুতগতিতে চলবে। কেননা, সে যদি পুণ্যবান হয়, তবে এটা উত্তম যার দিকে তোমরা তাকে এগিয়ে দিচ্ছ আর যদি সে অন্যকিছু হয়, তবে সে একটি আপদ, যাকে তোমরা তোমাদের ঘাড় হতে জলদি নামিয়ে ফেলছ। (সহিহ বুখারি: ১৩১৫)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে খেয়ালখুশিমতো জীবন-যাপন করা থেকে হেফাজত করুন। আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ-নিষেধ পুরোপুরি মেনে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।