১২ নভেম্বর, ২০২৪
আগামী বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ড হিসেবে সংযুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী এবং কট্টর ডানপন্থী বেজালেল স্মোত্রিচ। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সেটেলমেন্ট ডিভিশন এবং সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথের বরাতে সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (১১ নভেম্বর) স্মোত্রিচের নেতৃত্বাধীন রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টির এক বৈঠকে এই ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি যুক্তি দেখান, যে আন্তর্জাতিক আইনের ধারায় পশ্চিম তীর ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড হিসেবে যুক্ত রয়েছে, তা নাকচ করে দিয়ে আগামী বছর পশ্চিম তীর ইসরায়েলের হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ‘হুমকি’রও অবসান ঘটবে। বৈঠকে গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে দাপুটে জয় পাওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান কট্টরপন্থী এই ইহুদি নেতা।
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের অভূতপূর্ব দ্বিতীয় জয় ইসরায়েলের জন্য দারুণ সুযোগ। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে (২০১৭–২১) জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর, জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি, গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি এবং জুডিয়া ও সামারিয়া (বাইবেলে পশ্চিম তীরের নাম) অঞ্চলে বসতি স্থাপনের সুযোগ করে দেন। বাইডেন প্রশাসন আসার আগে পশ্চিম তীরের ওপর সার্বভৌমত্ব প্রয়োগের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল ইসরায়েল। এখন সেই কাজ সম্পন্ন করার সময় এসে গেছে।
স্মোত্রিচ বলেন, ইসরায়েল ও তার মিত্রদের জোট এবং তাদের বিরোধী উভয় পক্ষই বিশ্বাস করে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি।
ইসরায়েলি বসতির সম্প্রসারণ ও দখলকৃত অঞ্চলে সার্বভৌমত্বের প্রচার এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধিতা করা মন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার হুমকি দূর করার একমাত্র উপায় হলো পশ্চিম তীর ইসরায়েলের দখলে নেয়া।
স্মোত্রিচ আরও বলেন, যদিও কিছু দেশ, বিশেষ করে আরব দেশগুলো এর প্রতিবাদ করতে পারে। এ জন্য ইসরায়েলের পক্ষে সমর্থন এবং স্বীকৃতি লাভে কাজ করছি আমরা।
পরে স্মোত্রিচ এক্স-এ লেখেন, ‘২০২৫—জুডিয়া ও সামারিয়ার ওপর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার বছর।’ গত জুনে স্মোত্রিচ বলেছিলেন, ফিলিস্তিন থেকে পশ্চিম তীরকে অধিকার করা নিয়ে ‘গোপন পরিকল্পনা’ রয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক আদালত পশ্চিমতীরকে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড বলে রায় দেয়। ওই অঞ্চলে ইসরায়েলের বসতিগুলো অবৈধ ঘোষণা করে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী, পশ্চিম তীরসহ পূর্ব জেরুজালেমে ৭ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি ইহুদি ‘অবৈধ’ বাসিন্দা রয়েছে।