কারাগারে হামলায় নিহত ৪০ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দী

২৯ জুলাই, ২০২২

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণাধীন দোনেৎস্ক শহরের একটি কারাগারে আটক ৪০ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দী ইউক্রেনেরই গোলাবর্ষণে নিহত হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয়দের ছোঁড়া একটি রকেট ওলেনিকোভার একটি বন্দীশিবিরে আঘাত হেনেছিল। এই ঘটনায় আরো ৭৫ জন আহত হয়। তবে বিবিসি স্বাধীনভাবে এই খবরের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এই হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে। তারা পাল্টা রাশিয়াকেই এই ঘটনার জন্য দোষারোপ করছে। এই বন্দীশিবিরে চালানো নির্যাতনের প্রমাণ ঢাকা দিতেই রাশিয়া সেখানে হামলা করে বলে অভিযোগ করছে ইউক্রেন।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রুশ দখলদাররা তাদের অপকর্মের লক্ষ্য অর্জন করে ফেলেছে, এখন তারা তাদের নির্যাতনের প্রমাণ। সেখানে রুশ ফেডারেশনের নির্দেশে চালানো হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলছে।’

রুশ টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া উড়ছে, যেখানে কিছু মানুষের দেহাবশেষ দেখা যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। বিবিসি এই ফুটেজ যাচাই করতে পারেনি। তবে বিশ্লেষণ করে বোঝা যাচ্ছে, এই ভবনে এমন কোনো বিস্ফোরণ ঘটেছিল যাতে আগুন ধরে গিয়েছিল।

রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের একজন মুখপাত্র ডানিল বেজসোনভ বলেন, শিবিরের যে ব্যারাকে বন্দীদের রাখা হয়েছিল সেখানে সরাসরি আঘাত হেনেছিল রকেট। তিনি বলেন, নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত হিমার্স আর্টিলারি দিয়ে এই হামলা চালানো হয়। তারা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ইচ্ছেকৃতভাবে এই হামলা চালিয়ে উস্কানির অভিযোগ এনেছে।

তবে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির একজন উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেন, এটি ইউক্রেনীয় বন্দীদের ইচ্ছাকৃতভাবে এবং হিসেব কষে হত্যার এক সুপরিকল্পিত ঘটনা। তিনি জাতিসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি এ ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

মারিউপোলের আযভস্টাল ইস্পাত কারখানায় যেসব ইউক্রেনীয় সেনা আত্মসমর্পন করেছিল, তাদের মধ্য থেকে কিছু সেনাকে ওলেনিভকাতে নেয়া হয়েছিল বলে এর আগে জানা গিয়েছিল।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কোনো ধরনের ঘোষণা না দিয়েই শুক্রবার ওডেসা বন্দর পরিদর্শন করতে যান।

পাঁচ মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম ওই বন্দর থেকে খাদ্যশস্যবাহী জাহাজ যাত্রা শুরু করার আগে তিনি সেখানে গেলেন।

পশ্চিমা রাষ্ট্রদূতদের তিনি বলেন, ইউক্রেন তাদের খাদ্যশস্য রফতানি করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তার দেশ যে ভূমিকা পালন করে আসছে সেটি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

এবিষয়ে সম্প্রতি ইস্তাম্বুলে স্বাক্ষরিত চুক্তি কতোটা কার্যকর হতে পারে তা দেখার জন্য আজকের এই জাহাজ ছেড়ে যাওয়া একটি পরীক্ষা।

কর্মকর্তারা বলছেন, আরো ১৭ টি জাহাজে প্রায় ছয় লাখ টন মালামাল তোলা হচ্ছে পরিবহণের জন্য।

সূত্র : বিবিসি