‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিস’ নিয়ে ভর্তিচ্ছুদের পাশে ইবি ছাত্রলীগ

১৩ আগস্ট, ২০২২

ঘড়ির কাটায় সময় তখন বেলা ১১টা ৫৮ মিনিট। ঠিক ১২টায় শুরু হবে ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তিচ্ছু সুরাইয়া সুলতানা তখনও ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে। যেখান থেকে পরীক্ষার কেন্দ্র সাত থেকে আট মিনিট দূরত্বে। আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় হন্তদন্ত হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিলেন তিনি। আশঙ্কায় ছিলেন পরীক্ষায় বসা নিয়ে। তখনই তার সামনে বাইক নিয়ে হাজির হন মেজবাহুল ইসলাম নামের এক ছাত্রলীগকর্মী।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিস’ এর অংশ হিসেবে সেবা দিচ্ছিলেন তিনি। কেন্দ্রের ফটক বন্ধের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে বাইকে করে সুরাইয়াকে পৌঁছে দেন মেজবাহ। এভাবে শেষ সময়ে বেশ কয়েকজন ভর্তিচ্ছুকে কেন্দ্রে পৌঁছে দেন ছাত্রলীগকর্মীরা। শনিবার (১৩ আগস্ট) গুচ্ছ পদ্ধতির ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে এ দৃশ্য দেখা যায়।

সংগঠনটির নেতাকর্মীরা জানান, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নির্দেশনায় ক্যাম্পাসে পাঁচটি বাইক নিয়ে ‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিস’ পরিচালনা করেন ছাত্রলীগকর্মীরা। পরীক্ষা শুরুর পূর্ব থেকে পুরো সময় ক্যাম্পাসে তৎপর ছিলেন তারা। এ ছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে ভর্তিচ্ছু, অভিভাবক ও দায়িত্বরত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য জরুরি চিকিৎসা সেবা, অভিভাবক কর্নার, পানি, মাস্ক ও স্যালাইন সরবরাহ করেন। উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালামের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সহায়তা কার্যক্রম পরিদর্শন করে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।

শাখা ছাত্রলীগের সহায়তামূলক কার্যক্রম নিয়ে প্রশংসা করেন আগত ভর্তিচ্ছুরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আরিফ নামের এক ভর্তিচ্ছু বলেন, ‘জ্যামের কারণে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় খুবই চিন্তা হচ্ছিল। ঠিক তখনই এমন বাইক সার্ভিস পেয়ে খুবই ভালো লেগেছে।’ ব্যবসায় প্রশাসন ভবনে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনিচুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগের এমন কার্যক্রম প্রশংসার দাবিদার। ছাত্রলীগের নিকট সবসময় এমন ইতিবাচক কার্যক্রম প্রত্যাশিত।’

ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় কাজ করতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সংগঠনটির কর্মীরাও। বাইক সার্ভিস দেওয়া রাইডার মেজবাহুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একজন ক্ষুদ্র কর্মী। ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় বাইক সার্ভিস নিয়ে পাশে থাকতে পেরে নিজের কাছে খুবই ভালো লাগছে। ওরা বিশ্বদ্যিালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলে সারাজীবন ছাত্রলীগের সহযোগিতার কথা মনে রাখবে, এটাই বড় প্রাপ্তি।’ ছাত্রলীগকর্মী হানিফ হোসেন বলেন, নিজহাতে ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকদের মাঝে পানি বিতরণ করেছি। আমাদের সামান্য উপহার পেয়ে তাদের চোখেমুখে যে খুশি দেখেছি এটাই প্রাপ্তি। কাজে কোনো ক্লান্তিবোধ হয়নি।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার সংক্রান্ত পদক্ষেপে ছাত্রলীগ সবসময় সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দেবে। আমরা আমাদের সাধ্যের মধ্য থেকে আজ ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকদের সহায়তার চেষ্টা করেছি। আমাদের এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘ছাত্রলীগ সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল এবং থাকবে। আমাদের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে ভর্তিচ্ছুদের মাঝে সহায়তা নিয়ে হাজির হয়েছি। এতে ভর্তিচ্ছুরা উপকৃত হয়েছে এবং কর্মীরাও অনুপ্রাণিত হয়েছে। সামনে আরো বৃহৎ পরিসরে সহায়তার চেষ্টা থাকবে।’