২৫ জুন, ২০২৩
তেলে কেনা বাবদ ইরানের কাছে ২৫ কোটি ডলারের বকেয়া রয়েছে শ্রীলঙ্কার৷ ঋণ পরিশোধ করতে আগামী মাস থেকেই ইরানের সাথে চা বিনিময় শুরু করতে প্রস্তুত শ্রীলঙ্কা৷দ্বীপরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা শুক্রবার রয়টার্সকে বলেন, অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিধ্বস্ত দেশ মূল বাজারে বিক্রি বাড়াতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার রক্ষা করতে এই পরিকল্পনা নিয়েছে৷
২০১২ সালে আমদানি করা তেলের বিনিময়ের বিষয়টি নিয়ে ২০২১ সালে দুই দেশ সম্মত হয়েছিল৷ কিন্তু গত বছর শ্রীলঙ্কায় বিপুল পরিমাণ ডলারের ঘাটতির ফলে ভয়াবহ আর্থিক সঙ্কট শুরু হয়৷ ফলে বিনিময় শুরু হতে দেরি হচ্ছে৷শ্রীলঙ্কার চা বোর্ডের চেয়ারম্যান নীরজ ডি মেল রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এটি আমাদের জন্য সময়োপযোগী কারণ আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজারে প্রবেশাধিকার পেয়েছি৷ ইরান ও শ্রীলঙ্কা উভয়েই ডলারের ওপর নির্ভর না করে বাণিজ্য করতে পারে৷'তিনি বলেন,‘চুক্তিটি ছিল ৪৮ মাসের জন্য প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডলার মূল্যের চা পাঠানোর তবে আমরা প্রতি মাসে প্রায় ২০ লাখ ডলার মূল্যের চা দিয়ে এটি শুরু করার পরিকল্পনা করছি৷'
বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সেইলন চা হলো শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী ফসল৷ এই বিনিময়ের ফলে শ্রীলঙ্কার অতি প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে৷ ইরানের কাছে সেইলন চা বিক্রি শ্রীলঙ্কান রুপিতে বন্দোবস্ত করা হবে।সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নগদ সঙ্কটে থাকা দেশটিতে ১২৫ কোটি ডলার এনেছে এই চা৷
শ্রীলঙ্কার অন্যতম প্রধান চা ক্রেতা ছিল ইরান, কিন্তু ২০১৮ সালের ১২৮ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০২২ সালে ৭০ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে এই রফতানি৷ ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এই বাণিজ্যে প্রভাব ফেলেছে৷
শ্রীলঙ্কার চায়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখন সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) হয়ে ইরানে পাঠানো হয়৷
সরকারি তথ্য বলছে, পাঁচ বছর আগের তুলনায় গত বছর নিজেদের চা আমদানির পরিমাণ দ্বিগুণ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত৷
রাষ্ট্র-চালিত সেইলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বিনিময় কর্মসূচির অধীনে যে তেল কিনেছিল, শ্রীলঙ্কার রফতানিকারকদের মাধ্যমে চা পাঠানোর জন্য টি-বোর্ডকে অর্থ দেবে তারা৷নীরজ ডি মেল বলেন, ইরানি চা আমদানিকারকরা ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানিকে রিয়াল দেবে৷ তার কথায়,‘আমরা চূড়ান্ত নথির জন্য অপেক্ষা করছি এবং জুলাই থেকে রফতানি শুরু হবে বলে আশা করছি৷'
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ২৯০ কোটি ডলারের বেলআউট সুরক্ষিত করার পরে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মে মাসের শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কোটি ডলারে, যা ১৪ মাসের সর্বোচ্চ৷ রেমিট্যান্স এবং পর্যটনও এই রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করেছে, বলছেন বিশেষজ্ঞেরা ৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে