দেশে কর্মরত অবৈধ বিদেশিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে রিট

২০ মে, ২০২৪

বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী ১০ লাখ বিদেশির ১০ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার তদন্ত চেয়ে রিট করা হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৪ শিক্ষার্থী মীর মুহতাসিম ইসলাম, নাওশীন নাওয়ার নুরজাহান, মুমতাহিনা আলম ও মায়শা মুনাওয়ারা বাদী হয়ে রিট করেন। আবেদনকারীদের পক্ষে আদালতে রিটটি করেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন।

রিটে বলা হয়েছে, সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ লাভের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং অনুচ্ছেদ ১৯ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার লাভের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। গত দেড় দশকে বাংলাদেশে বেকার সমস্যা চরম আকার ধারণ করেছে। বেকারত্বের সমস্যা এমন চরম আকার ধারণ করেছে যে এ দেশে নাগরিক কর্মসংস্থান খুঁজতে গিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুবরণ করছে। অপরদিকে, বাংলাদেশে গত দেড় দশকে বহু অবৈধ বিদেশি বাংলাদেশে অবৈধভাবে কর্মক্ষেত্র দখল করে রেখেছে।

এতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে ১০ লক্ষাধিক অবৈধ বিদেশি শ্রমিক ও কর্মচারী বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োজিত রয়েছে। ফলশ্রুতিতে এ দেশের নাগরিকরা যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাংলাদেশে কর্মরত অবৈধ বিদেশি শ্রমিকরা ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর গড়ে ১০.২ বিলিয়ন ডলারের বেশি সমপরিমাণ টাকা এ দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২০ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮.৫ বিলিয়ন ডলার, অপরদিকে অবৈধ বিদেশিরা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গেছে ১০.২ বিলিয়ন। অর্থাৎ, আমাদের বাংলাদেশের শ্রমিকদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্সের অর্ধেকের বেশি অবৈধ বিদেশি কর্মচারীর মাধ্যমে বিদেশে চলে যাচ্ছে।

রিট আবেদনে আরও বলা হয়, অবৈধ হওয়ার কারণে এসব বিদেশি ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রদান না করে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। ফলে একদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। অজানা কারণে সরকার এ সমস্ত অবৈধ শ্রমিক স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

এমতাবস্থায়, গতকাল রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশি ৪ শিক্ষার্থী বাদী হয়ে রাষ্ট্রসহ যথাক্রমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়াও আইজিপি (পুলিশ) ও অতিরিক্ত আইজিপিকে বিবাদী করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে জনস্বার্থে একটি রিট পিটিশন ফাইল করেন। হাইকোর্ট ডিভিশন শিগগিরই এ রিটের ওপর শুনানি গ্রহণ করবেন।