গাজা থেকে ৪ ইসরায়েলি বন্দিকে উদ্ধারের দাবি

০৮ জুন, ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার নুসেরাত থেকে চার বন্দিকে জীবিত উদ্ধারের দাবি করেছে দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গত ৭ অক্টোবর তাদের একটি গানের অনুষ্ঠান থেকে ধরে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, উদ্ধারকৃতরা হলেন নোয়া আরগামানি (২৫), আলমোগ মের জান (২১), আন্দ্রে কোজলোভ (২৭) এবং সলমি ঝিভ (৪০)।

এই চারজনকে দিনের বেলা চালানো ‘জটিল’ অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দখলদার ইসরায়েল। অভিযানটি চালিয়েছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা। তাদের মধ্য গাজার নুসেরাতের আলাদা দুটি জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই চার জিম্মিকে উদ্ধারের সময় ইসরায়েলি বাহিনী যে হামলা চালায় এতে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়। যার মধ্যে শিশুও রয়েছে।

গাজার মূলকেন্দ্রে অবস্থিত আল-আকসা হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন করে এত মানুষ হতাহত হয়েছেন যে তারা তাদের চিকিৎসা দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না।

চীনে জন্ম নেয়া ইসরায়েলি নাগরিক নোয়া আরগামানিকে যখন হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে যান। তখন তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এতে দেখা গিয়েছিল এই তরুণী চিৎকার করে বলছে, ‘আমাকে হত্যা করবেন না।’

নতুন একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে উদ্ধার করে ইসরায়েলে নিয়ে আসার পর আরগামানি তার বাবাকে জড়িয়ে ধরেছেন।

উদ্ধারকতৃ আন্দ্রে কোজলোভ রাশিয়া থেকে ২০২২ সালে ইসরায়েলে আসেন। তিনি ৭ অক্টোবর নোভা গান উৎসবে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করছিলেন।

এদিকে আইডিএফ-এর হামলায় এত এত ফিলিস্তিনি নিহত হলেও তাদের কথা একবারের জন্যও মুখে আনেননি ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার পর বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত রোগীর ছবি প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এসব রোগীর মধ্যে শিশুও রয়েছে। এ ছাড়া দেইর এল-বালার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের করিডোরে অনেককে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। আহতদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালের কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

প্রসঙ্গত, বহু দশক ধরে সাধারণ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো গণহত্যা, নির্যাতন, ভূমি দখল, মানবাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি অপরাধের প্রতিবাদে গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এ হামলায় ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা ছাড়াও প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে বন্দী করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। একই দিন থেকে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা করে আসছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে ছোট্ট এই উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় ৩৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গত নভেম্বরে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সাতদিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল। চুক্তির আওতায় হামাস শতাধিক ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তিও দেয়। তবে এখনো তাদের হাতে শতাধিক ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে। এসব বন্দির মুক্তি নিশ্চিত করতে নেতানিয়াহু সরকারের ওপর দিনকে দিন চাপ বেড়েই চলেছে।


সূত্র: বিবিসি