সিকিমে বন্যা ও ভূমিধসে নিহত ৬, উত্তরবঙ্গে প্লাবনের শঙ্কা

১৪ জুন, ২০২৪

ভারতের উত্তর সিকিমের লাচুং, লাচেন ও চুংথাং এলাকায় আকস্মিক বন্যা ও প্রবল ভূমিধসে ৬ জন নিহত হয়েছেন। এসব এলাকায় বাংলাদেশিসহ প্রায় দেড় হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। লাচুং, লাচেনসহ উত্তর সিকিমের এই জায়গাগুলো পর্যটকদের খুবই প্রিয়। সেখানেই গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে বহু জায়গায় ভূমিধস দেখা দিয়েছে। এছাড়া বেইলি সেতু বন্যার পানির চাপে ভেঙে পড়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই ও আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, গতবছরও বন্যায় এই সেতুটি ভেঙে গেছিল। তারপর নতুন করে তা বানানো হয়। সেই পুনর্নির্মিত সেতুও বন্যায় ভেঙে গেছে। বহু রাস্তা ধস নেমে বন্ধ হয়ে গেছে। বহু বাড়ি ভেঙে গেছে। এই অঞ্চলটি দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ নিয়ে প্রশাসন সবচেয়ে বেশি চিন্তায় পড়েছে। কারণ, জায়গাগুলো বন্যা ও ধসের ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সেখানে যেতে অসুবিধা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দেড় হাজারের বেশি পর্যটক বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন। তাদের সে সব জায়গায় থাকতে বলা হয়েছে। বিকল্প রাস্তা খুললে এবং গাড়ি চলাচল শুরু হলে তারা নামতে পারবেন।

মঙ্গনের জেলাশাসক জানিয়েছেন, অম্ভিথাং এবং পাকশেপ গ্রামে তিনজন করে মোট ছয়জন মারা গেছেন। প্রচুর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাকশেপে একটি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে।

সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমসিং তামাং অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, সরকার ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ এবং মানুষের কাছে দ্রুত সাহায্য পৌঁছে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছে। আগামী দুই দিন সিকিমে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস আছে। বুধবার গ্যাংটকে ৬১, গেজিংয়ে ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাভাংলাতে হয়েছে ১১৯ মিলিমিটারের বেশি। মঙ্গন জেলাতে হয়েছে ২২০ মিলিমিটার। বর্ষার শুরুতেই সিকিমের এই বিপর্যয়ের আঁচ এসে লেগেছে উত্তরবঙ্গে। তিস্তা নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে। সরস্বতীপুর থেকে গজলডোবা, দোমোহানির সেতু পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতবছরই সিকিমে বৃষ্টির জেরে তিস্তা ভয়ংকর রূপ নিয়েছিল। এছাড়া জলপাইগুড়ি থেকে পানি ছাড়ায় তিস্তার নিচের দিকের অংশে পানির উচ্চতা বেড়েছে। সিকিমে বৃষ্টির জেরে তিস্তা ভয়ংকর হয়ে ওঠায়, উত্তরবঙ্গে যখন প্রবল বৃষ্টি হবে, তখন তিস্তা কী রূপ নেবে তা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন।