আল্লাহ যাদের জন্য মানুষের অন্তরে ভালোবাসা ঢেলে দেন

২৪ জুন, ২০২৪

ভালোবাসা আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে, আর তিনি তাদের অন্তরসমূহের মাঝে পারস্পরিক (ভালোবাসা ও) সম্প্রীতির বন্ধন স্থাপন করে দিয়েছেন; অথচ তুমি যদি দুনিয়ার যাবতীয় সম্পদও (এর পেছনে) ব্যয় করতে তবুও তুমি এ মানুষদের দিলের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসার বন্ধন স্থাপন করতে পারতে না; কিন্তু আল্লাহ তাআলা এদের মাঝে প্রীতি স্থাপন করে দিয়েছেন; অবশ্যই তিনি পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ কুশলী। (সুরা আনফাল: ৬৩)

ভালোবাসার মালিক যদি অন্তরে ‘ভালোবাসা’ সৃষ্টি করে না দেন তবে সেটি কখনোই পাওয়া সম্ভব হবে না। আমরা চাই সবাই আমাদেরকে ভালোবাসুক, আমরা কেউই চাই না যে, কেউ আমাদেরকে ঘৃণা করুক কিংবা আমরা কারো ঘৃণার পাত্রে পরিণত হই। তবে ভালোবাসা চাইলেই পাওয়া যায় না। অর্থ-সম্পদ দিয়েও ভালোবাসা পাওয়া সম্ভব না। আপনি কি জানেন, আল্লাহ কখন মানুষের মনে আপনার প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন?

দুটি বিষয় যদি ঠিক রেখে চলা যায়, তাহলে আল্লাহ মানুষের মধ্যে আমাদের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন। সেগুলো কী কী? সেই দুইটি বিষয় নিয়ে আল্লাহ বলেছেন, যারা আল্লাহ তাআলার ওপর ঈমান আনে এবং নেক কাজ করে, রহমান অচিরেই তাদের জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন। (সুরা মরিয়ম: ৯৬)

ঈমান শব্দের অর্থ দৃঢ় বিশ্বাস। ঈমান মূলত ছয়টি বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত, সেগুলো হলো- ১. আল্লাহ ২. ফেরেশতা ৩. আসমানি কিতাব ৪. নবী-রাসুল ৫. শেষ দিবস ও পুনরুত্থানে বিশ্বাস এবং ৬. ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেছেন, ‘আন্তরিক বিশ্বাস ও মৌখিক স্বীকৃতিই হলো ঈমান’। ইমাম শাফেয়ী, মালেক ও আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) -এর-মতে, অন্তরের বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি এবং আরকানসমূহ (ইসলামের বিধি-বিধান) কাজে পরিণত করার নাম ঈমান।

আমল হলো ঈমানদারের সৌন্দর্য। নামাজ-রোজার মতো যত ফরজ ইবাদত আছে সবগুলোই হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট নেক আমল। এ ছাড়া একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যত ভালো আমল করা হবে, হোক সেটি সামান্য মুচকি হাসির আমল, মানুষকে সুন্দর পরামর্শ দেয়ার আমল সবই নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। তবে নেক আমলের পূর্বশর্ত হচ্ছে ঈমান। আসমান-জমিনের পুরোটা যদি নেক আমল দিয়ে ভর্তি করা হয় তবুও ওই সব নেক আমলের কোনো দাম নেই। আল্লাহ বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন তালাশ করে, তার কাছ থেকে তা কখনোই কবুল করা হবে না এবং ওই ব্যক্তি আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ৮৫)

যাদের ঈমান ও আমল দুটোই আছে তাদের প্রতি মহামহিম রব শিগগির ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন। এ জন্য লক্ষ করে দেখবেন যারা আলেম ওলামা, যারা আল্লাহওয়ালা তাদের প্রতি মানুষের আলাদা টান থাকে, আলাদা ভালোবাসা থাকে। আমরা সাধারণ মানুষ যদি মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই, তবে আমাদেরকে নিজেদের ঈমান ও নেক আমল নিয়ে পূর্ণ সচেতন হতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।