পিরিয়ডের সময় তলপেট ব্যথা? কমানোর উপায়

২৭ জুন, ২০২৪

মাসিক বা পিরিয়ডের ব্যথা হওয়া একটি কমন ঘটনা। এটি মাসিক চক্রের একটি স্বাভাবিক অংশ। বেশিরভাগ নারীই জীবনের কোনো এক সময়ে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এ সময়ের ব্যথা সাধারণত পেট কামড়ানোর মতো হয়। এই ব্যথা কোমরে ও ঊরুতে ছড়িয়ে যেতে পারে। কখনো কখনো পেটের ব্যথাটি কিছুক্ষণ পরপর প্রচণ্ডভাবে কামড়ে ধরা বা খিঁচ ধরার মতো করে আসা-যাওয়া করে। অন্যান্য সময়ে একটানা ভোঁতা ধরনের ব্যথা হতে পারে।

ব্যথাটি একেক মাসিকের সময়ে একেক রকম হতে পারে। কোনো কোনো মাসে হয়তো সামান্য অস্বস্তির মতো অনুভব হয় অথবা একেবারেই কোনো ব্যথা হয় না। অন্যান্য মাসিকের সময়ে আবার বেশ ব্যথা হতে পারে। তবে কখনো কখনো মাসিক চলাকালীন সময়ের বাইরেও তলপেটে এরকম ব্যথা হতে পারে।

পিরিয়ডের ব্যথার পেছনে কোনো অন্তর্নিহিত রোগ না থাকলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে সাধারণত এই ব্যথা কমতে থাকে। সন্তান জন্মদানের পরে অনেকের পিরিয়ডের ব্যথা কমে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিরিয়ডের ব্যথা তেমন তীব্র বা জটিল রূপ ধারণ করে না। একারণে বাড়িতেই চিকিৎসা করা যায়।

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়

গরম সেঁক

গবেষণায় দেখা গেছে, পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর প্রচলিত কিছু ওষুধের চেয়ে গরম সেঁক বেশি কিংবা সমানভাবে কার্যকর। গরম সেঁক প্যারাসিটামলের চেয়ে বেশি কার্যকর এবং আইবুপ্রোফেনের সমান কার্যকর। সেই সঙ্গে গরম সেঁকের আরেকটা সুবিধা হলো এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

আদা খান

আদা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে পারে। যারা নিয়মিত পিরিয়ডের ব্যথায় ভোগেন তারা পিরিয়ডের ব্যথা শুরু হওয়ার আগেই আদা খাওয়া শুরু করতে পারেন। আদা কুচি করে এমনি এমনি খেতে পারেন অথবা গরম পানি অথবা চায়ের সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন। মাসিকের প্রথম ৩–৪ দিন দৈনিক তিনবেলা করে এভাবে আদা কুচি খেতে পারেন।

শ্বাসের ব্যায়াম

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর একটি ভালো উপায় হলো শ্বাসের ব্যায়াম করা। যেভাবে শ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে বুকের ওপরে এক হাত আর পেটের ওপরে আরেক হাত রাখুন, নাক দিয়ে বড় করে শ্বাস নিন। এমনভাবে শ্বাস নিতে হবে যেন বাতাস বুকের গভীরে ঢোকে এবং পেট ফুলে ওঠে। এভাবে শ্বাস নিলে পেটের ওপরের হাতটা ওপরে উঠে আসবে। তারপর মুখ দিয়ে এমনভাবে শ্বাস ছাড়ুন যেন মনে হয় একটি মোমবাতি নেভানো হচ্ছে। শ্বাস ছাড়ার পর পেটে রাখা হাত আবার আগের জায়গায় ফেরত আসবে

ব্যায়াম

গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যায়াম কিংবা যেকোনো উপায়ে শরীর সচল রাখলে পিরিয়ডের ব্যথা অনেকখানি কমে আসতে পারে। এজন্য সপ্তাহে ৩ দিন বা তার বেশি ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা করে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। আপনি চাইলে ভারী ব্যায়াম ছাড়াও সাঁতার কাটা, হাঁটা, সাইকেল চালানো ও ইয়োগার মতো হালকা ব্যায়াম বেছে নিতে পারেন।

পেটের ম্যাসাজ

তলপেট ও এর আশেপাশে আলতোভাবে ম্যাসাজ করলে সেটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

রিল্যাক্স থাকুন

এ সময় মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন ব্যথা ও অস্বস্তির অনুভূতি থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে।

কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল

এ সময় কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করার মাধ্যমে পিরিয়ডের ব্যথা কমানো যায়। এটি আপনাকে রিল্যাক্স করতেও সাহায্য করবে।