জাপানে হু হু করে বাড়ছে জমির দাম

০১ জুলাই, ২০২৪

জাপানে হু হু করে জমির দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত এক দশকের বেশি সময়ে দ্রুত গতিতে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। ২০১০ সালের পর থেকেই দেশটিতে জমির দাম বাড়ছে বলে ট্যাক্স এজেন্সি নিশ্চিত করেছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গত বছর গড়ে জমির দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। গত তি বছর ধরেই একই গতিতে জমির দাম বাড়ছে। ন্যাশনাল ট্যাক্স এজেন্সির এক সমীক্ষা থেকে এ তথ্য জানানো গেছে। এর আগে ২০২২ সালে জমির দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০২১ সালে বেড়েছে ০ দশমিক ৫ শতাংশ।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, টোকিও, উত্তর হোক্কাইডো এবং দক্ষিণ ওকিনাওয়াসহ দেশটির ৪৭ প্রশাসনিক অঞ্চলের মধ্যে ২৯টিতেই জমির দাম বেড়েছে। আগের বছর জমির দাম বেড়েছে ২৫টি প্রশাসনিক অঞ্চলে।

আবাসন এবং বাণিজ্যিক উভয় ক্ষেত্রেই জমির চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দামও বাড়ছে। ফুকুওকা প্রশাসনিক অঞ্চলে জমির দাম ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে যা অন্যান্য প্রশাসনিক অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

পুনঃউন্নয়ন প্রকল্পের কারণে ফুকুওকাতে অফিসের চাহিদা বেড়েছে। এছাড়াও পর্যটন বাড়ায় সেখানে হোটেল এবং রেস্তোরাঁর চাহিদাও বেড়ে গেছে।করোনা মহামারির পর বিভিন্ন দেশ থেকে জাপানে নতুন করে পর্যটক আসতে শুরু করায় টোকিওর গিঞ্জা শপিং এলাকায় একটি প্লট টানা ৩৯ বছর ধরে জাপানের সবচেয়ে ব্যয়বহুল অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

২০২৩ সালে গিঞ্জার ওই প্লটের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। টানা দুই বছর সেখানে জমির দাম পড়ছে প্রতি বর্গ মিটারে ৪৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ইয়েন।

গত মে মাসে ৩০ লাখের বেশি পর্যটক জাপানে ভ্রমণ করেছে। এছাড়া গত বছর দেশটিতে ভ্রমণ করেছে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। ২০১৯ সালে কোভিড পরিস্থির আগে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ। অর্থাৎ জাপানের পর্যটন খাত আবারও করোনা মহামারির আগের অবস্থানে ফিরতে শুরু করেছে।

এদিকে জাপানি মুদ্রার পতন কোনোভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না। সম্প্রতি জাপানি ইয়েনের মান উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। গত বুধবার মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের মান কমে ৩৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছে। অর্থাৎ সবশেষ ১৯৮৬ সালে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

মার্কিন ডলারের বিপরীতে জাপানি মুদ্রার মূল্য কমে দাঁড়িয়েছে ১৬০ দশমিক ৩৯ ইয়েনে। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সুদের হারের মধ্যে বড় পার্থক্যের কারণেই এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা জাপানের অর্থমন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিকে নজর রাখছে। যদিও এরই মধ্যে মুদ্রাটিকে সহায়তা দিতে এপ্রিলের শেষের দিকে ও মে মাসের শুরুতে ৬২ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে জাপান সরকার।

চলতি বছর জাপান সুদের হার শূন্য থেকে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে এই হার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।