এনআইডি জালিয়াতি রোধে কর্মকর্তাদের যেসব নির্দেশনা ইসির

২৯ জুলাই, ২০২৪

এনআইডি জালিয়াতি রোধে কর্মকর্তাদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (২৯ জুলাই) এনআইডি শাখার পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) মো. আব্দুল মমিন সরকার নির্দেশনাটি ইতোমধ্যে সব জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছে ইসি।

এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশগুলো অনুমোদন করেছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। সেগুলো হলো-

১. নতুন ভোটার নিবন্ধনকালে উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার মাসভিত্তিক নিবন্ধন রেজিস্টার ব্যবহার করতে হবে।

২. নিবন্ধনের জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে উপস্থিত ভোটারের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে যেসব কাগজপত্র অনলাইনে যাচাই করা যায় যেমন- জন্ম সনদ, শিক্ষা সনদ, পিতা-মাতা ও স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি ইত্যাদি যাচাই করে নিবন্ধন ফরম-০২ (যে ফরমে নাগরিকের সব তথ্য উল্লেখ করে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়)-এর তথ্যের সঙ্গে মিল আছে কি-না যাচাই করে দেখা যেতে পারে। নিবন্ধন ফরমে উল্লেখিত ঠিকানার সঙ্গে পিতামাতার এনআইডি এবং জন্ম সনদের ঠিকানার মিল রয়েছে কি না তা মিলিয়ে দেখতে হবে।

 

৩. নিবন্ধন ফরমে উল্লেখিত বয়সের সঙ্গে ব্যক্তির চেহারা/শারীরিক অবয়বের মিল আছে কি না তা দেখতে হবে।

৪. যাচাই করে নিবন্ধন ফরম এবং সংশ্লিষ্ট দলিলাদিতে চেকড অ্যান্ড ভেরিফায়েড লিখে যিনি ভেরিফাই করেছেন তার স্বাক্ষর ও সিল প্রদান করা। অতঃপর রেজিস্টার অনুসারে ক্রমিক নং-এ টিক চিহ্ন দিয়ে একই সঙ্গে নিবন্ধন ফরম-২ এ সংশ্লিষ্ট শনাক্তকারী, যাচাইকারী, ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের এনআইডি নম্বর স্বাক্ষর, সিল (প্রযোজ্যক্ষেত্রে) আছে কি না, তা নিশ্চিত হয়েই কেবল উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার স্বাক্ষর (তারিখসহ)/সিল দেবেন। ফ্যাক্সিমিলি ব্যবহার করা হলে বিধিবহির্ভূত নিবন্ধনের আশঙ্কা দেখা দেবে। অবশ্য হালনাগাদ কার্যক্রমের সময় অধিক সংখ্যক নিবন্ধন হয় বিধায় ফ্যাক্সিমিলি ব্যবহার প্রয়োজন পড়ে। তবে অফিসে অবশ্যই অফিসার নিজে স্বাক্ষর/সিল দেবেন। ওই রেজিস্ট্রার অনুসারে সংশ্লিষ্ট ভোটারের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার তথা রেজিস্ট্রেশন অফিসার কর্তৃক ভোটারযোগ্য/অসম্পূর্ণ আবেদন/বাতিল বিবেচিত হলে রেজিস্টারে উক্তরূপ সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করতে হবে।

৫. এনআইডি সার্ভারে আপলোডের সময় উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসারের নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে আপলোড করা হয়। এক্ষেত্রে অফিসার আবশ্যিকভাবে নিজে উপস্থিতি থেকে ওই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। একান্তই ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের সহায়তা নিতে হলে তিনি সার্বক্ষণিক সার্ভারে সজাগ দৃষ্টি রেখে উক্ত কার্যক্রম সম্পাদন করবেন। আপলোড শেষে লগ আউট নিশ্চিত করতে হবে।

৬. যেদিন আপলোড কার্যক্রম করা হবে, সেদিনই আপলোডের পরপর রিপোর্ট জেনারেট করতে হবে এবং এগুলো মাসিক ভিত্তিতে পিডিএফ এবং হার্ড কপি আকারে অফিস ফাইলে অফিসারের নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করতে হবে।

৭. পাশাপাশি কেন্দ্রীয়ভাবে পাক্ষিক/মাসিক ভিত্তিতে উক্ত রিপোর্ট সংগ্রহের (সিস্টেমে সংখ্যাগত তথ্যাদি ইনপুট প্রদান এবং রিপোর্ট এটাসমেন্টসহ) ব্যবস্থা করতে হবে। অধীন অফিসসমূহের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অফিস পরিদর্শনকালে উক্ত রিপোর্টসমূহ দেখাতে হবে;

নির্দেশনায় সব উপজেলা/ থানা নির্বাচন অফিসার তথা রেজিস্ট্রেশন অফিসারদের অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনপূর্বক ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস ও জেলা নির্বাচন অফিসের মাসিক সমন্বয় সভায় বিধি মোতাবেক ও সুচারুরূপে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য পর্যবেক্ষণ জোরদার করা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা/সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কর্তৃক মাঝে মধ্যে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে সরেজমিন অপারেটরদের কার্যক্রম অবলোকন করার জন্য বলা হয়েছে।