সাগরপথে অনুপ্রবেশকালে নৌকাডুবি: নিহত বেড়ে ১৮

০৭ আগস্ট, ২০২৪

বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে রোহিঙ্গাবোঝাই ফিশিং বোট ডুবির ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহত সকলে রোহিঙ্গা মুসলিম।

সেদেশে অব্যাহত যুদ্ধের ফলে প্রতিনিয়ত এদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া ও রাজারছড়া ঘাটে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল ৯ টায় বোট ডুবির এ ঘটনা ঘটে।

বিজিবি-কোস্ট গার্ড সীমান্তে কড়া সতর্ক থাকলেও তাদের ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে রোহিঙ্গাদের এ অনুপ্রবেশ ঘটে। এর মধ্যে বিজিবির হাতে অনেকে আটক হলেও বেশির ভাগ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আত্মীয় স্বজনদের কাছে আশ্রয়ে চলে যায়।

বোট ডুবির ঘটনায় একমাত্র জীবিত তাবদিলা নামে এক নারী জানান, বোটে ৩১ জন রোহিঙ্গা ছিল। এর মধ্যে তার স্বামী, তার দুই মেয়ে, তিন নাতনি ও মেয়ের জামাই ছিল। দুই মেয়ে ও দুই নাতনির লাশ পেয়েছে। বাকিদের খোঁজ মেলেনি।

তিনি জানান, গত সোমবার ভোর চারটার দিকে মিয়ানমারের মংডুস্থ ফয়েজি পাড়া বরাবর ঘাট হতে বোটে উঠেন। নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯ টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবির ছড়া ও রাজারছড়া সৈকত বরাবর পৌঁছলে বোটটি ডুবে যায়। এতে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

শালবাগান ২৬নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ ব্লকের হাসিনা বেগম জানান, বোটে উঠার আগে মুঠোফোনে যোগাযোগ ছিল নিহত স্বজনদের সাথে। এরপর থেকে যোগাযোগ ছিল না। টেকনাফের সৈকতে রোহিঙ্গাবোঝাই বোট ডুবির খবর পেয়ে খোঁজতে আসে। সেখানে তার ভাবির মৃতদেহ পেলেও বাকি দুই ভাইপো ও দুই নাতনির খোঁজ মেলেনি।

অপর এক রোহিঙ্গা নারী বলেন, আবছার নামের এক নৌকার মাঝির মাধ্যমে তার আত্মীয়রা এপারে আসছিলেন। কারও খোঁজ পায়নি। এদিকে নৌকা ডুবির খবর পেয়ে রোহিঙ্গা স্বজনরা সৈকতে ভিড় জমিয়েছে। অনেকে পরিচয় সনাক্ত করে আত্বীয় স্বজনরা লাশ নিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় মেম্বার রশিদ মিয়া জানান, প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে। বিজিবিকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, লাশের ব্যাপারে থানায় খবর দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে সাবরাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান জানান, গত সোমবার সকালে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ-সংলগ্ন সাগরে মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকালে রোহিঙ্গাবোঝাই ট্রলার ডুবির ঘটনায় ঘটে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ৫ শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। এ নিয়ে পৃথক স্থান থেকে ১৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হল।

আব্দুল মান্নান বলেন, গত সোমবার ভোরে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ-সংলগ্ন সাগরে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার অনুপ্রবেশকালে ডুবির ঘটনা ঘটে। এ ট্রলার ডুবির ঘটনার ৫ শিশুর মৃতদেহ গোলারচর সৈকতে ভেসে আসে। পরে স্থানীয়রা সৈকতে মৃতদেহ দেখতে পেয়ে উদ্ধার স্থানীয় এক মসজিদে নিয়ে আসে।

খবর পেয়ে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা স্বজনরা লাশগুলো নিয়ে যায় বলে জানান স্থানীয় এ ইউপি চেয়ারম্যান।

এ ব্যাপারে জানতে টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহি উদ্দিন আহমেদ এর মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও কল রিসিভ করছেন না। ফলে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।