পুরান ঢাকার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা

০৮ আগস্ট, ২০২৪

রাজধানীতে পুরান ঢাকার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করছেন বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।

বুধবার সরেজমিন পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার বাংলাবাজার, সদরঘাট, লক্ষীবাজার, রায়সাহেব বাজার, তাঁতীবাজার, নয়াবাজার, গুলিস্তান, দয়াগঞ্জ মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের অনুপস্থিতিতে রাস্তায় যানবাহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা যেহেতু রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য দায়িত্ব নিয়েছি, এজন্য সর্বোপরি চেষ্টা চালিয়ে যাব। পুলিশ কর্মবিরতিতে আছেন বলেই আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে দায়িত্ব নিয়েছি। এখানে সবাই সহ উদ্যোগে কাজ করছে।

শিক্ষার্থীর আরও বলেন, আমাদের সাথে স্বেচ্ছায় কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও সহযোগিতা করছেন। আমরা বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। সেই সঙ্গে কেউ কেউ আমাদের এই উদ্যোগে স্বাগত জানিয়ে সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দিয়ে খাবার পানি, বিস্কুট, রুটি, কলাসহ বিভিন্ন কোমল পানীয় উপহার দিয়ে যাচ্ছেন।

এ ছাড়া সড়কের যানবাহনের চাপ সামলাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সহযোগিতা করছেন স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসসহ বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। এ সময় তাদের জাতীয় পতাকা ও বাঁশি হাতে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এর মধ্যে একাধিক নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে বোরকা পরিহিত অবস্থায় অনেককে দেখা গেছে।

এ সময় পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, গভর্নমেন্ট মুসলিম হাই স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জনসাধারণ বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের হাতে ধরে এগিয়ে যাবে দেশ। শিক্ষার্থীদের এ ত্যাগ ও অবদানের কথা ইতিহাসে বিরল হয়ে থাকবে। আমাদের এই প্রজন্মের তরুণরা দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে একটি দেশকে পরিচালিত করতে হবে। পুলিশ এবং এদেশের রাজনৈতিক দলের উচিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যায়। এরপরই সারাদেশে পুলিশের উপর বর্বরোচিত হামলা ও থানায় অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুরের ঘটনায় সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় পুলিশ। ফলে অনিরাপদ হয়ে ওঠে রাজধানী ঢাকার রাস্তাগুলো।