ছাত্র আন্দোলনে বিশ্বে যেসব সরকারের পতন ঘটেছে

১১ আগস্ট, ২০২৪

তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মুখে জগদ্দল পাথরের মতো আসন গেড়ে বসা শেখ হাসিনার মতো বিশ্বে বহু সরকারের পতন ঘটেছে বা সরকার প্রয়োগকৃত আইন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে। জেনে নেওয়া যাক ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকারের পতন ঘটা কয়েকটি দেশের কথা।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের পতন

অর্থনৈতিক মন্দায় দেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে তীব্র ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। ২০২২ সালের এপ্রিলে গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করেন। সে সময় ছাত্র-জনতার তীব্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল দেশ।

দক্ষিণ আফ্রিকার সোয়েটো বিপ্লব

১৯৭৬ সালে জোহানেসবার্গের সোয়েটো এলাকায় শ্বেতাঙ্গ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। আফ্রিকান ভাষায় পড়াশোনা করতে বাধ্য হওয়ার বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৬ জুন শুরু হওয়া বিক্ষোভে কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনায় কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারান। দুই দশক পর আপার্থাইড বা বর্ণবাদের অবসান হয়। দেশটিতে আজও ১৬ জুন জাতীয় ছুটি হিসেবে পালন করা হয়।

ভেলভেট বিপ্লব

১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার রাজধানী প্রাগে আনুমানিক পাঁচ লাখ মানুষ ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট শাসকদের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে জড়ো হয়েছিলেন। অবশেষে ডিসেম্বরের ১০ তারিখ কমিউনিস্ট সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। আন্দোলনের অহিংস ধরনের কারণে এই আন্দোলন ভেলভেট বিপ্লব হিসেবে পরিচিত।

গ্রিসের সেনা সরকার উৎখাত

ছয় বছর সেনাবহিনীর স্বৈরশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল গ্রিসের জনগণ। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-জনতা। ১৯৭৩ সালে এই আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এথেন্স পলিটেকনিক। এ ঘটনায় সেনা আক্রমণে ছাত্রদের ১৫ জন মারা যান। ছাত্রদের নিহত হওয়ার ঘটনা মেনে নিতে পারেনি দেশটির সাধারণ জনতা। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসক নতি স্বীকার করে। গণতন্ত্রের আঁতুড়ঘর হিসেবে খ্যাত গ্রিসে ফিরে আসে গণতন্ত্র।

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ

ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিপক্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেশটির অভ্যন্তরে বিক্ষোভ চলছিল। এরই মধ্যে ১৯৭০ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন কম্বোডিয়ায়ও আক্রমণের অনুমোদন দিলে কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে গুলিতে চারজন নিহত হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা দেশ। ৪০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। এসব ঘটনা যুদ্ধ নিয়ে মার্কিনিদের মনোভাবে কিছুটা পরিবর্তন এনেছিল বলে মনে করেন অনেক ইতিহাসবিদ।