হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন নিয়ে ভারতে তোলপাড়

১২ আগস্ট, ২০২৪

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের নতুন একটি রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে ভারতে। এটি ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে ভারতের শাসকদল বিজেপির বিরোধীরা। ইতিমধ্যে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলো কারচুপি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। দাবি উঠেছে, যুগ্ম সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনের।

এর আগে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারমূল্য কারচুপির অভিযোগ তুলেছিল মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। নতুন অভিযোগ ভারতের শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড’ বা ‘সেবি’র সর্বময় কর্ত্রী মাধবী পুরী বুচ ও তার স্বামী ধবল বুচের বিরুদ্ধে।

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের নতুন রিপোর্টে বলা হয়েছে, আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দর কারচুপির অভিযোগ ‘সেবি’ ঠিকমতো তদন্ত করেনি। কারণ, সংস্থার কর্ণধারেরই স্বার্থ সেখানে জড়িয়ে ছিল।

হিন্ডেনবার্গ জানায়, গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানির বিদেশি সংস্থায় মাধবীর অংশীদারত্ব ছিল। মাধবী ‘সেবি’তে যোগ দেন ২০১৭ সালে। তার ঠিক আগে সম্ভাব্য নজরদারি এড়াতে মাধবীর নামে থাকা সব বিদেশি বিনিয়োগ তার স্বামী ধবল বুচ নিজের নামে করে নেন।

শনিবার প্রকাশিত রিপোর্টে হিন্ডেনবার্গ জানায়, মাধবী এবং ধবল বারমুডা ও মরিশাসের দুটি তহবিলে লগ্নি করেছিলেন। সেই তহবিলের টাকা ঘুরপথে চলে যায় আদানিদের সংস্থায়। ওইভাবে বাড়িয়ে তোলা হয় আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দর।

এ রিপোর্ট প্রকাশের পরপরই শুরু হয়ে যায় রাজনীতি। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ, তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র, সুস্মিতা দেব, সাকেত গোখলে, শিব সেনার (উদ্ধব) প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, আম আদমি পার্টির (আপ) মনীশ সিসোদিয়ারা নতুন করে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। যুগ্ম সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবিও নতুন করে জানানো হয়।

জয়রাম সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করেন, ‘প্রহরীকে কে পাহারা দেবে?’ মহুয়া মৈত্র লেখেন, ‘এই চেয়ারপারসনের অধীন সেবিকে আর বিশ্বাস করা যায় না। সুপ্রিম কোর্টের উচিত নতুনভাবে সক্রিয় হওয়া। ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের চূড়ান্ত নিদর্শন এটা।’

শিব সেনার (উদ্ধব) নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, এখন বোঝা যাচ্ছে, তিনি চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও সেবি কেন আদানিদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য জানায়নি।

এদিকে সব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে সেবি চেয়ারপারসন মাধবী ও তার স্বামী ধবল এক বিবৃতিতে বলেছেন, যাবতীয় আর্থিক তথ্য প্রকাশ্যে আনতে তারা প্রস্তুত। যখন তারা কোনো সরকারি পদে ছিলেন না সে সময়কার সব তথ্যও যেকোনো সংস্থা খতিয়ে দেখতে পারে।