যশোরকে দেশের প্রথম দুর্নীতিমুক্ত জেলা করার প্রত্যয় শিক্ষার্থীদের

১৫ আগস্ট, ২০২৪

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে শহরের টাউন হল ময়দানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ মহা সমাবেশে যশোরের সাতটি উপজেলা ও জেলা শহর থেকে আগত প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

দীর্ঘ এক মাস রাজপথে ছাত্র আন্দোলনের পর গত ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে সরকার পতন হয়েছে। পালিয়ে এবং গা-ঢাকা দিয়েছে সরকারের শীর্ষ পদে থাকা দূর্নিতীবাজ নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তারা। তবে দেশের অভ্যন্তরে থেকে যাওয়া দূর্নিতী ও অনিয়ম দূর করে দূর্নিতীমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানের উদ্দেশ্যে নানা দিকনির্দেশনা নিয়ে এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে যশোর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দরা। এ মহাসমাবেশের মধ্যে দিয়ে যশোরকে দেশের প্রথম দূর্নিতীমুক্ত জেলা ঘোষণা করার লক্ষ্যে কাজ করার কথা জানান ছাত্র নেতৃবৃন্দরা।

মহাসমাবেশের সভাপতিত্ব করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ খান। এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মারুফ হোসেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীবৃন্দরা। বক্তব্য দেন যশোর সরকারি মহিলা কলেজের সমন্বয়ক জেসিনা মুর্শীদ, যশোর এমএম কলেজের সমন্বয়ক মাসুম বিল্লাহ, খন্দকার রুবাইয়া। এছাড়াও বক্তব্য দেন, রাসেল মাহমুদ, সাদেকা তাহনী উর্মি, ইমরান হোসেন, আমানাউল্লাহ, ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।

জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় এ মহাসমাবেশ। এরপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, 'গত এম মাস রাজপথে বৃষ্টিতে ভিজে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন একটি বাংলাদেশ পেয়েছি। এ সংগ্রামে লড়াই করেছি আমরা আর এজন্য দেশটি নতুন করে সংস্কার করার দায়িত্ব আমাদেরই। সৈরাচারী সরকার পতনের পর আমাদের যশোরে বিভিন্ন সমন্বয়কদের মধ্যে দলাদলি সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে সমন্বয়কদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। আমরা কোন রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে চাই না। দেশে নৈরাজ্য দুঃশাসন সৃষ্টি করা সরকারের পদত্যাগের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা চালাচ্ছে। বিভিন্ন টুকাই এবং পতন হওয়া সরকারের কিছু সন্ত্রাসী বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে এগুলো রুখে দিতে হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি যশোরের প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ খান বলেন, 'জনতা ছাত্র সমাজের ওপর ভরসা রাখা শুরু করেছে। আর এমন সময় কিছু দুষ্কৃতকারীরা ষড়যন্ত্র করে আমাদের অর্জিত নতুন বাংলাদেশকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যশোরকে নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছেন। আমরা চাই যশোরকে প্রথম দূর্নিতীমুক্ত জেলা ঘোষণা করতে। যশোরের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের দূর্নিতীর বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। তার আগে আমাদের জনগণকে দূর্নিতীমুক্ত হতে হবে এবং দূর্নিতীর বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদী মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। আমরা এ লক্ষ্যে এখন থেকে কাজ শুরু করবো।' নেতৃবৃন্দদের বক্তব্য প্রদানের শেষে জাতীয় শপথ পাঠ শেষে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।