চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবিতে মোমবাতি প্রজ্বালন

১৭ আগস্ট, ২০২৪

কলকাতায় নারী চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে গণসংহতি ও মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় রাজশাহী নগরীর ধর্ম-বর্ণ ও সব শ্রেণিপেশার মানুষ এতে অংশ নেন।

শুক্রবার রাতে সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মোমবাতি হাতে এ কর্মসূচি করেন তারা। এ সময় মৌমিতার জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচিতে আইন বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা রহমান বলেন, এখন আমাদের পড়ার টেবিলে থাকার কথা কিন্তু আমার বোন মৌমিতার বিচারের দাবিতে এখানে দাঁড়িয়েছি। যেখানে মৌমিতার নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তার পক্ষে অবস্থান কর্মসূচি না করে বরং সেখানে তারা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করেছ সেখানে মৌমিতার অনেক বাংলাদেশি বোন তার ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি চেয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও মোমবাতি প্রজ্বালন করছে। আমরা চাই ভারত প্রশাসন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দিক। এছাড়াও বাংলাদেশে তনুসহ যেসব ধর্ষণকাণ্ড ঘটেছিল সেগুলোকে আবারও তদন্তের আওতায় এনে দোষীদের খুঁজে বের করা হোক।

রাজশাহী ভদ্রা এলাকার পারভিন নামের এক নারী বলেন, রাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ আয়োজনের কথা শুনে আমি ঘরে বসে থাকতে পারিনি। মৌমিতার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা আর কোনো নারীর সঙ্গে না ঘটুক। তাকে কত পাশবিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে সেটি আমরা সকলেই ইতোমধ্যে জেনেছি। বাংলাদেশকে নতুনভাবে স্বাধীন করেছে ছাত্রসমাজ সেই স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো ধর্ষকের ঠাই হতে পারে না।

রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কর্তৃক যে ধর্ষণকাণ্ড ঘটেছিল তা আমরা এখনো ভুলে যায়নি। সেই ছাত্র সংগঠনকে আমরা বাংলার জমিন থেকে বিতাড়িত করতে পেরেছি। ছাত্রসমাজের হাতে মুক্ত হওয়া এই বাংলার মাটিতে আর কোনো ধর্ষণ আমরা দেখতে চাই না। তনুসহ আরও যারা আছেন তাদের ধর্ষকরা এখনো বাংলার মাটিতে মুক্তভাবে বিচরণ করছে। আমরা  তাদেরকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান। তিনি বলেন, আমি নীরবতা পালনকালে ভাবছিলাম যে ডাক্তার সমাজের উপকার করে থাকে, সেই ডাক্তার মৌমিতা যখন কাজ শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় যায় তখন তাকে ধর্ষণ করা হয়। বাসা হচ্ছে সব থেকে নিরাপদ জায়গা সেখানেও মৌমিতা রক্ষা পায়নি। বাংলাদেশে শহীদ হওয়া শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ না শুকাতেই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আমার মেয়ের উপরে এমন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। মৌমিতার ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। 

এ সময় গণসংহতি ও মোমবাতি প্রজ্বালনে প্রায় দুই হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন।