স্বৈরাচারী হাসিনার বিচারের দাবিতে খেলাফত মজলিসের ৩ মাসব্যাপী কর্মসূচি

১৭ আগস্ট, ২০২৪

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার দাবি এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ৩ মাসব্যাপী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে খেলাফত মজলিস। আগামী ২৩ আগস্ট থেকে রাজধানীসহ দেশব্যাপী সমাবেশের মধ্যে দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ।

গতকাল শনিবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর পল্টনস্থ ফেনী সমিতি মিলনায়তনে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সাধারণ অধিবেশন থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরে দলটি।

দাবিগুলো হলো- আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছর শাসনামলে বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ডসহ সব খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার; বিগত সময়ে গুম হওয়া ব্যক্তিদেরকে উদ্ধার; আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসনসহ সবকিছু ঢেলে সাজিয়ে বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে প্রত্যাহার; একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন; শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়া এবং শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার; গ্রেফতারকৃত সব ছাত্র-শিক্ষক-রাজনীতিবিদ, আলেম-উলামা ও সাধারণ মানুষকে নিঃশর্ত মুক্তি; বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত সব শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান দ্রুত কার্যকর এবং আহতদের জরুরি ভিত্তিতে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা; আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করা; আরব আমিরাত ও সৌদি আবর-সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে আটক বাংলাদেশী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের দ্রুত মুক্তির উদ্যোগ ও তাদের পরিবারকে নিয়মিত মাসিক আর্থিক সহযোগিতা প্রদান; আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও অবিলম্বে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাত থেকে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু করা; সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ পেশাগত কোনো কাজে হামলার ঘটনা প্রতিরোধ করা, দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং এবং দেশ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রাষ্ট্রীয় সব ব্যয়ের ক্ষেত্রে কৃচ্ছতা সাধন, দুর্নীতি দমন, ব্যাংক ঋণ সহজীকরণ এবং রেমিটেন্স, ফ্রিল্যান্সিং, আইটি ও রফতানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পকে প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা করা।

সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল বাছিত আজাদ বলেন, ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে বহুমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির নানা অপচেষ্টায় লিপ্ত। ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থেকে তা মোকাবেলা করতে হবে। আমরা জানি, বিশাল চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন সরকারকে পথ চলতে হচ্ছে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। এ সময় বিগত স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী রাজনৈতিক দলসমূহকে বয়কট করতে দেশবাসীর উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পষিদ সদস্য মাওলানা ফেরদাউস বিন ইসহাক, ডা: আবু হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, এবিএম সিরাজুল মামুন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, মাওলানা সামছুজ্জামান চৌধুরী, অধ্যাপক এ এস এম খুরশীদ আলম, প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, আলহাজ্ব আবু সালেহীন, ডা. রিফাত হোসেন মালিক, প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু প্রমুখ।