শিশুর শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি, পূরণে করণীয়

১৮ আগস্ট, ২০২৪

শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে মা-বাবার চিন্তার অন্ত থাকে না। কীসে তার সব পুষ্টি চাহিদা মিটবে তা দিয়ে সদা সতর্ক থাকেন। তারপরও দেখা যায় শিশুর প্রোটিনের ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে। আসলে বাবা-মায়েরা অনেকসময় বুঝতে পারেন না যে কেবল মাছ-মাংস খাওয়ালেই প্রোটিনের চাহিদা মেটে না। 

সুষম খাবারের পাশাপাশি শিশুকে নিয়মিত উদ্ভিজ্জ প্রোটিনও দিতে হবে। বাদ দিতে হবে বাইরের খাবার, ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত মাংস। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা তো মিটবেই না বরং হানা দেবে নানা শারীরিক সমস্যা। 

শিশুর জন্য প্রোটিনের গুরুত্ব -
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, শিশুদের বড় হয়ে ওঠার জন্য প্রোটিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি মস্তিষ্কের বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাড়ন্ত শিশুর পেশি-হাড়ের গঠন মজবুত করার পাশাপাশি এটি ত্বক, চুল ভালো রাখতেও সাহায্য করে। তাই শিশুদের খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন— সব কিছুই রাখতে হয় নির্দিষ্ট পরিমাণে। 

শিশুর প্রোটিনের ঘাটতি হলে কী হয়? 
প্রোটিনের ঘাটতি হলে শিশু খুব দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়বে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। ফলে বিভিন্ন সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। প্রোটিনের অভাবে পেশির শক্তি কমে যাবে। গায়ে, হাত-পায়ে ব্যথা হবে। শিশুর বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশেও ঘাটতি দেখা দেবে এর অভাবে। 

প্রোটিনের অভাবে শিশুর মনোযোগ কমবে, মনে রাখার ক্ষমতাও হ্রাস পাবে। শরীরে কোনো ক্ষত হলে তা সহজে সারতে চাইবে না।

প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে শিশুকে কী কী খাওয়াবেন?

কিছু খাবার রয়েছে যা শিশুর প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এমন কিছু খাবার সম্পর্কে চলুন জেনে নিই- 

ডাল 
শিশুর খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন রকম ডাল রাখুন। কারণ ডালে প্রোটিনের পাশাপাশি ভিটামিন, খনিজও রয়েছে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। 

সেদ্ধ ডিম 
রোজ একটি করে সেদ্ধ ডিম রাখুন শিশুর পাতে। এতে প্রোটিন তো আছেই পাশাপাশি আছে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন এ, বি ১২, বি ৫, ভিটামিন ডি, জিঙ্কের মতো উপকারি সব উপাদান। 

ছোট মাছ 
শিশুরা ছোট মাছ একদমই খেতে চায় না। তবে প্রোটিনের ঘাটতি মেটাতে অবশ্যই এমন মাছ খেতে হবে। মৌরলা, দেশি ট্যাংরা, কাজরি, ফলুইতে ভরপুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন থাকে ভরপুর মাত্রায়। গরু বা খাসির মাংস যত কম খাওয়াবেন ততই ভালো। এর বদলে কম তেল ও মশলা দিয়ে রান্না করা মুরগির মাংস খাওয়া। সবজি দিয়ে রান্না করা চিকেন স্যুপও বেশ উপকারি। 

শিশু আমিষ খেতে চাইলে খাবার তালিকায় দুধ, সয়াবিন রাখুন। প্রোবায়োটিকের জন্য দই খাওয়ান। তবে মিষ্টি দই নয়। ঘরে পাতা টক দই খাওয়ান। খাওয়াতে পারেন বাদামও। চিনাবাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তা, আখরোট খেলে প্রোটিনের চাহিদা তো মিটবেই সেসঙ্গে পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও।