কুমিল্লায় বাহার-সূচনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, অজ্ঞাতনামা আসামি ৪০০

১৯ আগস্ট, ২০২৪

কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার ও তার বড় মেয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তাহসিন বাহার সূচনাসহ ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৪০০ জনকে।

রোববার (১৮ আগস্ট) রাতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় আবদুল হান্নান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ভূইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বিকেলে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকার নন্দনপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেন কুমিল্লার শিক্ষার্থীরা। এসময় বাহার ও তার মেয়ে সূচনার নির্দেশে তাদের অনুসারীরা শিক্ষার্থীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে কুমিল্লা সিটির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রামপুরের শাহিন মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়াসহ (২০) আরো অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। তাদেরকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুমকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে না পারায় পরে মাসুমের মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। পরে মামলার বাদী ও নিহতের আত্মীয়স্বজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মরদেহের ছবি দেখে শনাক্ত করেন মাসুমকে।

মামলার বাদী নিহত মাসুমের নিকটাত্মীয় বলে জানা গেছে। তিনি নগরীর দিশাবন্দ এলাকার বাসিন্দা।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (পলাতক) আমিনুল ইসলাম টুটুল, কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, কুমিল্লা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আহম্মেদ নিয়াজ পাভেল, কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান পিয়াস, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হাবিবুর আল আমিন সাদী, ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর সাইফুল আলম রনি (সূচনার বর), কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ, কুমিল্লার বাগিচাগাওয়ের কাউসার জামান কায়েস, তালপুকুর পাড়ের সুজন দত্ত, কালিয়াজুড়ির মুরাদ মিয়া, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আজাদ হোসেন, কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, কাউন্সিলর ইকরামুল হক, রেইসকোর্সের আবদুল কাইয়ূম, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আবুল হাসান প্রমুখ।

নাম উল্লেখ করা ৬২ আসামির মধ্যে আরও আছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মাসুদ, কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক শিহানু, কুমিল্লার মধ্যম আশ্রাফপুরের নাজমুল ইসলাম শাওন, ছাত্রলীগ নেতা সালেহ আহম্মেদ রাসেল, কুমিল্লার অশোকতলার শাহ আলম খান, শাসনগাছার আবু হেনা, সাক্কু, ধর্মপুরের শহীদুল ইসলাম চপল, ফখরুল ইসলাম রুবেল, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর গাজী গোলাম সরওয়ার শিপন, কুমিল্লার সদর দক্ষিণের শ্রীমন্তপুরের দুলাল হোসেন অপু, নেউয়ারার জাকির হোসেন, পাথুরিয়াপাড়ার প্রিতুল, শাকতলা মীর পুকুর পাড়ের রবিন, কালা মোস্তফা, অশোকতলার সাইফুল ইসলাম খোকন, শ্রীভল্লভপুরের মো. মেহেদী, পাঁচথুবির চেয়ারম্যান হাসান রাফি রাজু, শিমপুরের মনিরুজ্জামান মনির, ব্রাহ্মণপাড়ার ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান শরীফ, শিমপুরের নিতান্ত, শ্রীভল্লবপুরের আবদুল মালেক ভূঞা, মো. খাইরুল হাসান, মো. হানিফ দুলাল, ঢুলিপাড়ার রাশেদুজ্জামান রাশেদ, শাসনগাছার জালাল, দক্ষিণ বিজয়পুরের মো. জাফর আহাম্মদ শিপন, মোস্তফাপুরের মুন্সীবাড়ির মো. হাসান, মনোহরপুরের মোখলেছুর রহমান, বাগিচাগাওয়ের শফিকুর রহমানের ছেলে বাপ্পি, দৌলতপুরের ছায়া বিতানের জালাল (পিচ্চি জালাল), কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সোহেল, দক্ষিণ চর্থার কাউসার আহমেদ খন্দকার ও আকাশ, মুন্সেফবাড়ির ফরহাদ উল্লাহ, লক্ষীনগরের কবির হোসেন, দিশাবন্দের গোলাম মোস্তফা, দুলাল মিয়া, জিয়াউর রহমান, লক্ষীনগরের জালাল, সুজানগর চৌমুহনীর জালাল, হানিফ প্রমুখ। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৪০০ জনকে।