বন্যার্তদের পাশে ইবির সর্বস্তরের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা

২৪ আগস্ট, ২০২৪

টানা প্রবল বর্ষণ ও উজানে ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা ঢলে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ দেশের ১১ জেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। বন্যাকবলিত এসব মানুষের সহায়তায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে অর্থ ও ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও (ইবি) তহবিল সংগ্রহ করছে সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্র্থীরা। তহবিল সংগ্রহ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো উদ্ধারকারী টিম কাজ করছে বন্যাদূর্গত এলাকায়, পৌঁছে দিচ্ছেন ত্রাণ।

জানা গেছে, বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে নিজেদের এক দিনের সমপরিমাণ বেতন প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইবির শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। শনিবার শিক্ষক সমিতি ও কর্মকর্তা সমিতির পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। রবিবার ব্যাংক খোলার প্রথম কার্যদিবসে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে সংগঠনগুলোর কার্যনির্বাহি সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া সকালে ডিনস কমিটির সভায় বিভাগীয় সভাপতিদের বন্যার্তদের সাহায্যে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানোরও সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে যতটা সম্ভব কৃচ্ছসাধন করে জন্মাষ্টমী উদযাপন এবং সেখান থেকে একটা অংশ বন্যার্তদের সাহায্যের ফান্ডে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইবি পূজা উদযাপন পরিষদ। জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা না করে শোভাযাত্রা আয়োজনের টাকা যাবে বন্যার্তদের সহায়তায়। পাশাপাশি অর্থ সহায়তা প্রদানের জন্য পূজার দিন মণ্ডপের সামনে থাকবে বক্স। এছাড়াও কেউ চাইলে বিকাশ, নগদ, রকেটেও সাহায্য পাঠাতে পারবে। পূজার দিন বিকালে সব টাকা একত্রিত করে বিশ্বস্ত মাধ্যমে বন্যার্তদের সাহায্যে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত দাস।

এছাড়া ইবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন সামাজিক-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে গত কয়েকদিন ধরে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও শৈলকুপাসহ ক্যাম্পাসের পাশ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় তহবিল সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া বিভাগসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিউদ্যোগে তহবিল সংগ্রহসহ বিভিন্নভাবে বন্যার্তদের সহায়তায় কাজ করছেন। এদিকে শনিবার ক্যাম্পাসসহ ক্যাম্পাসের আশেপাশে বিভিন্ন পয়েন্টে গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি পালন করা হয়। যেখানে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানদের নগদ অর্থ, কাপড় ও শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপকরণ জমা দিতে দেখা যায়। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসব ত্রাণসামগ্রী বন্যার্তদের সাহায্যে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট।

সুইট বলেন, বন্যার্তদের সহযোগিতায় আমাদের গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শনিবার সারাদিন চলবে। আপনারা যার যার জায়গা থেকে বন্যার্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসুন।

কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট বলেন, ইবির কর্মকর্তারা দেশের ক্রান্তিলগ্নে সবসময় পাশে থাকে। কর্মকর্তারা তাদের একদিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বন্যায় দূর্গতদের জন্য প্রদান করবেন।

শিক্ষক সমিতিরি সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ক্রান্তিকালে এই ধরণের সহযোগিতা করে এসেছি। ইবি শিক্ষক সমিতি সব সংকটেই এটা করে থাকে।’