প্রত্যেক মুসলমানের ওপর কোরআনের হক

২৭ আগস্ট, ২০২৪

আল্লাহ তাআলা আমাদের দয়া মায়া করে আল্লাহর কিতাব কোরআন দিয়েছেন। হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তিনি ও আমাদের জন্য বড় নেয়ামত। বান্দা কোনো কিছুর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার এত বেশি নৈকট্য হাসিল করতে পারবে না যেটা কোরআন দিয়ে পারবে।

কোরআন সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, যে এই কোরআনকে সামনে রাখলো, পথ প্রদর্শক বানালো এই কুরআন তাকে পথ দেখিয়ে জান্নাতে নিয়ে যাবে। আর যে কোরআনকে পিছে রাখলো, গুরুত্ব দিল না এই কোরআন তাকে জাহান্নামে টেনে নিবে। তাই প্রতিটি বান্দার উচিত কোরআনের হকগুলো সঠিকভাবে পালন করা। কোরআনুল কারিমের বিশেষ কিছু হক আছে।

১. কোরআন সহি করে পড়া। ২. কোরআনকে মুহাব্বাত করা। ৩. কোরআনকে শ্রদ্ধা করা। ৪. কোরআনের উপর আমল করা। ৫. কোরআনের দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয়া। ৬. কোরআনকে আল্লাহর জমিনে কায়েম করা।

এসবই কোরআনের হুকুক অর্থাৎ আমাদের কাছে পাওনা। এই জন্য কোরআনের যে হক আছে তা আমাদের দিলে আসা দরকার। কোরআনে কারিমকে মুহাব্বত করতে হবে। বন্ধুর সাথে কথা বলতে তো মজাই লাগে, কেন? মুহাব্বাত আছে তাই। কিন্তু কোরআন তিলাওয়াত করতে মজা লাগে না, কেন? মুহাব্বাত নাই তাই। কোরআনের প্রতি যে আমাদের শ্রদ্ধা থাকতে হবে এটা নেই।

কোরআন শিক্ষা করা
আল-কোরআনকে মেনে চলা মুসলিমদের উপরে আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন। আল-কোরআন এসেছে বিশ্ব মানবতাকে হেদায়াতের সঠিক পথের সন্ধান দেয়ার জন্য। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, রমজান মাস, যাতে কোরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের হিদায়াতস্বরূপ এবং হেদায়াতের সুস্পষ্ট নির্দেশনাবলি ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। (সুরা আল-বাকারা ১৮৫) 

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপরে ফরজ। (ইবনে মাজা) জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আল-কোরআন শিক্ষা করাও প্রত্যেক মুসলমানের উপরে আল্লাহ ফরজ করে দিয়ে ছেন। রসুল (সা.) এ সম্পর্কে মুসলমানদেরকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন,

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা কোরআন ও ফারায়েজ (উত্তরাধিকার আইন) শিক্ষা করো এবং মানুষদেরকে শিক্ষা দাও কেননা আমাকে উঠিয়ে নেয়া হবে।’ (সূনা সূ ন আত-তিরমিযি) তাই, আমাদের উপরে কর্তব্য আল-কোরআন ও ইলমে ফারায়েজ (উত্তারাধিকার আইন) শিক্ষা করা এবং এর আলোকে জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্র পরিচালনা করা।

কোরআনকে সম্মান করা 

যে ব্যক্তি একনিষ্ঠভাবে তার জীবনকে কোরআন চর্চায় উৎসর্গ করে, মহান আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত করেন। কোরআনের অন্যতম অলৌকিক শক্তি হলো, তা মানুষের অন্তরে সংরক্ষিত হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘বরং যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তাদের অন্তরে তা (কোরআন) এক সুস্পষ্ট নিদর্শন। (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৪৯) 

যারা এই কোরআন শেখে, চর্চা করে, গবেষণা করে, কোরআনের দাওয়াত দেয়, কোরআন মোতাবেক জীবন গড়ে, তারা মহান আল্লাহর বিশেষ বান্দায় পরিণত হয়। হাদিসের ভাষায় যাদের ‘আহলুল্লাহ’ বা আল্লাহর পরিজন বলা হয়েছে।

রসুল (সা.) বলেছেন, কোরআন তিলাওয়াতকারীরা আল্লাহর পরিজন এবং তার বিশেষ বান্দা।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১৫) এজন্য কোরআনকে সম্মান করা আমাদের জন্য অনেক বেশি জরুরি।

বিশেষ করে কোরআনের গিলাব লাগাতে হবে। রেহালে বা উঁচু জায়গায় রাখতে হবে। টুলে রাখলে তোয়ালে বিছাতে হবে।  কোরআনের দিকে পা করে বসা বা শোয়া যাবে না। কোরআনকে নিচে রেখে উপরে বসা যাবে না। এই সব কিছু কোরআনকে সম্মানের অন্তর্ভুক্ত।