বুরকিনা ফাসোতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা, নিহত দুই শতাধিক

২৮ আগস্ট, ২০২৪

মধ্য আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে হামলায় ২০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে আল-কায়েদাঘনিষ্ঠ সশস্ত্র গোষ্ঠী জামাত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিমিন (জেএনআইএম)। হামলায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৪০ জন। খবর আলজাজিরার।

বুরকিনা ফাসোর কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর কায়া থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরের বারসালোঘো অঞ্চলে গত শনিবার এ হামলা হয়। জানা গেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য পরিখা খোঁড়ার কাজে যুক্ত মানুষজনের ওপর বন্দুকধারীরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। হামলার পর থেকে বেশ কয়েকজন সেনা নিখোঁজ রয়েছেন। হামলাকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র ও একটি সামরিক অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যায়।

সেনেগালের রাজধানী ডাকার থেকে আলজাজিরার নিকোলাস হক জানান, হামলার ঘটনার পরবর্তীসময়ের একটি ভয়াবহ ভিডিও প্রকাশ করেছে জেএনআইএম। নিকোলাস হক আরও বলেন, ভিডিওতে আমরা নারী-পুরুষ-শিশুদের নিজেদের খোঁড়া পরিখার ভেতর পড়ে থাকতে দেখেছি। সেটি যেন একটি গণকবরে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে কায়া শহর থেকে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য কর্মীদের আনা হয়েছে।

নিকোলাস হক উল্লেখ করেছেন, বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনী শুক্রবারই জানত যে, একটি আক্রমণ ঘটতে চলেছে এবং এ লক্ষ্যে জনগণকে তারা পরিখা খননের জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, এটি বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনীর হতাশাকেই তুলে ধরছে। এই বাহিনী আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে তাদের দেশের অর্ধেক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।

বুরকিনা ফাসোর ভূখণ্ডের অর্ধেক আল-কায়েদার ঘনিষ্ঠ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিকোলাস হক বলেন, সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে গত শুক্রবারই আভাস পেয়েছিল বুরকিনা ফাসোর সামরিক বাহিনী। এ জন্য স্থানীয় লোকজনকে পরিখা খুঁড়তে বলা হয়েছিল।

এক দশক আগে প্রতিবেশী মালি থেকে আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সম্পর্কিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো বুরকিনা ফাসোতে আসার পর থেকে এটি অন্যতম প্রাণঘাতী হামলা।

জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো আসার পর থেকে সাহেল অঞ্চলের দেশ বুরকিনা ফাসো নিরাপত্তা সংকটে পড়েছে। এই নিরাপত্তা সংকটকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালে দেশটিতে দুইবার সশস্ত্র অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে।

দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার হামলার নিন্দা করলেও ঠিক কতোজন নিহত হয়েছেন তা জানায়নি।

দীর্ঘদিন ধরে বুরকিনা ফাসোয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর লড়াই চলছে। এসব লড়াইয়ে নিহত হয়েছে হাজারো মানুষ। আর এক দশকেরও বেশি সময়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২০ লাখের বেশি মানুষ।