জাতি দাঁড়িয়ে গেলে কোনো স্বৈরাচার মাথা তুলতে পারে না : ডা. শফিকুর রহমান

২৯ আগস্ট, ২০২৪

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘একটি জাতি যেখানে দাঁড়িয়ে যায়, সেখানে কোনো স্বৈরাচার সেখানে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না।’বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জেলার শহীদ পরিবারের সাথে জামায়াতের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমার আফসোস এই যুদ্ধের শহীদদের মধ্যে আমি একজন হতে পারলাম না। এই সৌভাগ্য আল্লাহ যাদের দান করেছেন তাদের জন্য আমার ঈর্ষা হয়। এই আন্দোলনে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ আহত-নিহত হয়েছে। এই জাতি আজীবন তাদের কাছে ঋনী।’

আমিরে জামায়াত বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতালে আহত ভাইদের দেখতে গিয়েছিলাম, কালিজা ফেটে গেছে। এক ভাইয়ের দুই চোখে গুলি লেগে অন্ধ হয়ে গেছে, সে তো আর এই দুনিয়ার আলো দেখবে না। এদের মা-বাবাকে আমরা কী শান্তনা দেবো। কত মায়ের বুক তারা খালি করে দিলো, একটা বারও কি তারা চিন্তা করল না।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহী গিয়েছিলাম। শুনতে পারলাম, আন্দোলনে এক রিকশাচালক ভাই কলসিতে পানি ও গ্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের পানি খাওয়াতে বেড়িয়েছিল। একপর্যায়ে হটাৎ পর পর তিনটা বুলেট তারা শরীর ভেদ করে চলে যায়। সে বিয়ে করেছিল মাত্র এক বছর, তার স্ত্রী ছয় মাসের গর্ভবতী। সে আমাকে বলল, নিজেকে নয় গর্ভের সন্তান নিয়ে চিন্তিত। আমি বললাম, তোমাদের আল্লাহই পথ দেখাবেন। আর মানুষ হিসেবে আমরা পাশে থাকব। প্রতি মাসে সম্মানের সহিত চলার মতো একটি অংশ তোমাদের কাছে পৌঁছে যাবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের সাথে বসেছিলাম। আমরা বলেছি, যেই পরিবারগুলোর আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন আপনারা তাদের সহযোগিতা করুন। আহতদের জন্য যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করুন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। বীরদের বীরত্বগাঁথা আমাদের পাঠ্যপুস্তকসহ সকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্থান করে দিতে হবে। এটা তাদের পরিবারের চাহিদা নয়, এটা আগামী প্রজন্মের চাহিদা। তারা যাতে জানতে পারে, তাদের পূর্বের যুবকরা জালেমের সামনে বুক পেতে দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তারা বলেছিল, বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর।’

 

আমিরে জামায়াত বলেন, ‘আসুন সকল শোককে আমরা শক্তিতে রূপান্তরিত করি।’

নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আমির মুমিনুল হক সরকার, মহানগরীর নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, মহানগরীর সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাকির হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবির নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সভাপতি আসাদুজ্জামান রাকিব, জেলা সভাপতি ছাত্রনেতা আবু সুফিয়ান, মহানগর ও জেলা সহকারী সেক্রেটারি জামাল হোসাইন ও আবু সাঈদ মুন্না, জেলা, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও থানা আমিরসহ স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তিরা।