তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

৩০ আগস্ট, ২০২৪

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুয়। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সচিবালয়ে তার অফিসকক্ষে  এই সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময়, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অর্জিত নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান। ফ্রান্সের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সব সময় আগ্রহ ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশের কথা শুনলেও এক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতি এবং অনিয়ম হয়েছে। যে পরিমাণ অর্থ এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে তার সুফল পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশের জনগণ পায়নি। আমরা দুর্নীতির জায়গাগুলো প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছি।

রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুয় সাম্প্রতিক বন্যায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি  মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।

জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বন্যার্তদের সঙ্গে যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাই বন্যাদুর্গত এলাকায় ইন্টারনেট ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি জেলায় ভি-স্যাট স্থাপন করা হয়েছে। মোবাইল টাওয়ারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটরের ফুয়েল ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে এবং সামনে দেশের প্রত্যেকটি জেলায় ভি-স্যাট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে যে কোন দুর্যোগে সংশ্লিষ্ট এলাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।

বাংলাদেশের আইসিটি সেক্টরে কাজ করার সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা নাহিদ আরও বলেন, দেশের যুবসমাজ তথ্য প্রযুক্তিতে পারদর্শী এবং তারা এই সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী। প্রণোদনা পেলে তরুণরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক ভালো করবে।

সৌজন্য সাক্ষাতের সময় রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুয় আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্ররা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে এবং সকল শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। বর্তমানে যে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে তা ছাত্র-জনতার প্রস্তাবিত সরকার। সমন্বয়কারীদের মধ্যে আমরা দুজন সরকারে এসেছি বাকিরা এখনো আন্দোলন করছে। আন্দোলনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য যেন ব্যাহত না হয় এবং সরকার যেন সে কাজগুলো ঠিকঠাক মতো করে তাই বাইরে থেকে তারা প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, এই মুহূর্তে একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে চাই যেখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করব।

রাষ্ট্রদূত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং ৭১ টিভি সাংবাদিক ফারজানা রুপার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে আমরা খুবই সচেতন। আমরা চাই কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়। বিগত সরকারের সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। আমরা চাই না সামনের বাংলাদেশে এ রকম ঘটনা ঘটুক। ৭১ টিভি এবং ফারজানা রুপার  বিরুদ্ধে বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ রয়েছে সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চাচ্ছি যেখানে সবাই তার মত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারবে। পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাসের মধ্য দিয়ে আলোচনা শেষ হয়।

এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ডা. মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।