চাঁদপুরে জলাবদ্ধতায় প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি

৩১ আগস্ট, ২০২৪

চাঁদপুরে শাহরাস্তি উপজেলায় গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কৃষকের ৩৪১ হেক্টর জমির রোপা আউশসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একই সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমনের বীজতলা। ফলে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে। এতে কৃষকদের ৬ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে গিয়ে গত কয়েকদিন শাহারাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া উত্তর, সূচিপাড়া দক্ষিণ, রায়শ্রী উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং আশপাশের এলাকা ঘুরে ফসলের জমির ক্ষতিগুলো চোখে পড়েছে। এসব এলাকার বড় বড় মাঠ জুড়ে রয়েছে রোপা আউশ। তবে অধিকাংশই পানির নিচে তলিয়ে গেছে। 

উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, বন্যায় উপজেলার ১২৯ হেক্টর রোপা আউশ, ২০ হেক্টর বীজতলা, আবাদকৃত আমন ১৩৩ হেক্টর ও শাক শব্জি ৫৯ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৪ হাজার ৩শ' ৪১জন।

রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের উনকিলা গ্রামের কৃষক কেরামত আলী বলেন, আমার ১ একর জমিতে আউশের আবাদ আছে। ধান কর্তনের সময় হয়েছে। কিন্তু এখন সবই শেষ। বসতঘর ও রাস্তায় পানি। আমাদের এই ক্ষতির কি হবে বলতে পারছি না। 

একই এলাকার দুলাল নামের আরেক কৃষক বলেন, এবছর তিনি ১ একরের অধিক জমিতে রোপা আউশ আবাদ করেছেন। তার জমিগুলো এখন পানিতে তলিয়ে গেছে। জমিতে গাছের চিহ্নও দেখা যায় না। ঋণ করে টাকা নিয়ে জমিতে বিনিয়োগ করেছি। তিনি এখন অনেকটা দিশেহারা। 

শহীদ উল্লাহ নামের কৃষক বলেন, এবারের বন্যায় আমাদের ফসলসহ সব ধরণের ক্ষতি হয়েছে। বসতঘর, রাস্তা ও ফসল সবকিছু শেষ। বহু কৃষকের ধান পচে গেছে। অনেকেই পানির নিচ থেকে ধান কাটছেন। সব মাটিতে পড়ে গেছে। 

সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, তাদের এলাকার সব ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে আছে। ফসলের এই ধরণের ক্ষতি গত এক দশকে হয়নি। আমরা কেউ আউশ কাটতে পারিনি। আমনের বীজতলা পানির নিচে। শাকসবজি কোনকিছুই অবশিষ্ট নেই। ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন এলাকার কৃষকরা।

শাহরাস্তি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়শা আক্তার বলেন, গত কয়েকদিনে উপজেলার জলাবদ্ধতা কবলিত ইউনিয়নে মাঠ জরিপে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ হাজার কৃষকের তথ্য পেয়েছি। রোপা আউশসহ বিভিন্ন ফসলে ৬ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রাথমিক ক্ষতির আশঙ্কা করছি। আমরা এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠাবো। আগামীতে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।