ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা শুরু

০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগমের আশ্বাসে কর্মবিরতি স্থগিত করে কাজে যোগ দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। আজ রবিবার সারা দিন পর রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করেছেন তারা।

এর আগে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিত করা এবং কর্মস্থল নিরাপদ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। বৈঠক থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের দাবি-দাওয়া যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করা হবে। এসময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জমান বলেন, তারা জরুরি সেবাসহ কিছু সেবা এখনই চালু করবেন।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখবেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে আলোচনা চলতে থাকে। রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকেরা কাজে যোগ দেন।

গতকাল শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনা ঘটে। হামলার বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে আজ সকাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকেরা। পরে সব চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনায় বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। এরপর চিকিৎসকেরা সারা দেশে কর্মবিরতির ডাক দেন।

দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের সামনে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচির ঘোষণা দেন হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আবদুল আহাদ। তিনি বলেন, সারা দেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত হবে।

এ ঘোষণার পর ঢাকা মেডিকেলে আসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম। তিনি আন্দোলকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করে দাবিগুলো পূরণের আশ্বাস দেন। পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনা, দুই প্লাটুন বিজিবি ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

আন্দোলনরত চিকিৎসকদের চার দফা দাবি হলো-

১. হাসপাতালের মতো জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যেসব ব্যক্তি বা কুচক্রী মহল এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা। দ্রুতবিচার আইনের মাধ্যমে তাদের শাস্তির আওতায় আনা।

২. নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে অবিলম্বে দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য পুলিশের (আমর্ড ফোর্স) মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

৩. নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে হাসপাতালে রোগীর ভিজিটর (ভিজিটর কার্ডধারী) ছাড়া বহিরাগত কাউকে কোনোভাবেই ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়া। বিষয়টি স্বাস্থ্য পুলিশের মাধ্যমে নিশ্চিত করা।

৪. হাসপাতালে রোগীর সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো অবহেলা-অসংগতি পরিলক্ষিত হলে, তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ আকারে জানানো। এভাবে শাস্তি নিশ্চিত করা যেতে পারে, কিন্তু কোনোভাবেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।