আবারও বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেলপথে পণ্য আমদানি শুরু

০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দীর্ঘ দেড় মাস বন্ধ থাকার পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে রেলপথে ভারতের সঙ্গে আমদানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে ভারত থেকে ট্রেনে দুটি চালানে দুই হাজার ৪৬০ টন জিপসাম সার এবং ৬১টি ট্রাক্টর আমদানি হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই থেকে নিরাপত্তার কারণে দুই দেশের মধ্যে রেলপথে পণ্য পরিবহন এবং যাত্রী যাতায়াত বন্ধ রাখে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরপর দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে পুনরায় শুরু হয় রেলপথে আমদানি বাণিজ্য। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপারের বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, ১৯ জুলাই থেকে দুই দেশের মধ্যে রেলে পণ্য পরিবহন এবং পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত বন্ধের পাশাপাশি বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়াও বন্ধ করে ভারত সরকার। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত চালুর দাবিতে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে গত ১২ আগস্ট একটি চিঠি দেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সাড়া না দেওয়ায় দেশে বাণিজ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি বাংলাদেশনির্ভর ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ে। অবশেষে ভারত সরকার ৪৭ দিন পর গতকাল বুধবার রেলপথে পণ্য বহন সেবা চালু করে।

আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসার কাজে প্রায়ই ভারতে যেতে হয় ব্যবসায়ীদের। ভিসা বন্ধ থাকায় ভারতে যাতায়াতে অসুবিধায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাড়াতাড়ি ভিসা চালুর দাবি জানাচ্ছি।’

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মহসিন মিলন জানান, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বেনাপোল দিয়ে রেলপথে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েন। পুনরায় এ বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

তিনি আরও জানান, এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেলপথে পাথর, জিপসাম ও সিমেন্ট তৈরির সামগ্রী আমদানির পাশাপাশি গার্মেন্টস, কেমিক্যাল, মোটরকারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। ভারতের কলকাতা থেকে সড়কপথে ট্রাকে পণ্য পরিবহনে পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লেগে যায়। রেলপথে তিন থেকে চার ঘণ্টায় বেনাপোল বন্দরে পণ্য পৌঁছে যায়।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, ‘বেনাপোল দিয়ে রেলপথে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহন চালুর জন্য গত মাসের ১২ আগস্ট ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এরপর এ মাস থেকে পুনরায় রেলপথে পণ্য আমদানি চালু হয়েছে। কিন্তু যাত্রী চলাচল বন্ধ রেখেছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।’ খুব দ্রুতই যাত্রী চলাচল শুরু হবে বলে তিনি জানান।

বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত অপরিচালক রেজাউল করিম জানান, দীর্ঘদিন রেলপথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর পুনরায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু হয়েছে এবং পণ্য দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বেনাপোল দিয়ে রেলপথে ভারত থেকে শুধু পণ্য আমদানি করা হয়। রফতানি পণ্য স্থলপথে সেদেশে যায়।