গাজার ‘মানবিক অঞ্চলে’ ইসরায়েলি হামলায় ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধে গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত আছে। দখলদার দেশটির হামলায় ‘মানবিক অঞ্চল’ দক্ষিণ গাজায় আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক ডজন। খবর বিবিসির।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, তাদের বিমান সূক্ষ্ম অস্ত্র ব্যবহার করে হামাস যোদ্ধাদের খান ইউনিসের একটি অপারেশন সেন্টারে হামলা চালায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো তিনটি হামলায় খান ইউনিস শহরের পশ্চিমে আল-মাওয়াসির মানবিক অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত তাঁবুতে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

হামাসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষের অপারেশন ডিরেক্টর বলেন, ইসরায়েলের হামলায় ৪০ জন নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মধ্যরাতের পরপরই আল-মাওয়াসি এলাকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুনের শিখা আকাশে উঠতে দেখা যায়।

হামলার স্থানের কাছাকাছি বাস করা একটি দাতব্য সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক খালেদ মাহমুদ বলেন, হামলার পরপরই তিনিসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকরা সাহায্যের জন্য ছুটে যান। কিন্তু হামলার ভয়াবহতা দেখে তারা হতবাক হন।

মাহমুদ বলেন, ‘হামলার ফলে সাত মিটার গভীর তিনটি গর্ত তৈরি হয়েছে এবং ২০টিরও বেশি তাঁবু চাপা পড়েছে।’

কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমান হামলার ফলে সৃষ্ট গভীর গর্ত থেকে ফিলিস্তিনিদের উদ্ধার করার জন্য বেসামরিক ব্যক্তিরা তাদের হাত দিয়ে বালি খনন করছে।

টেলিগ্রামে পোস্ট করে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একজন মুখপাত্র বলেছেন, এটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হামাসের মূল সন্ত্রাসীদের ওপর আক্রমণ করেছে যারা খান ইউনিসের মানবিক এলাকায় ছদ্মবেশে একটি কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ কমপ্লেক্সে কাজ করছিল।’

হামলার আগে নির্ভুল অস্ত্রের ব্যবহার, বিমান হামলা এবং অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্যসহ বেসামরিক লোকদের ক্ষতির সম্ভাবনা কমাতে অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি খান ইউনিসে পালিয়েছে।

১১ মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ইতোমধ্যে ৪১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯৫ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি। হামলার পর বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।