মাদরাসা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানাতে গিয়ে হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নানা অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ভুইঘর দারুচ্ছুন্নাহ ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকালে ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অধ্যক্ষের নির্দেশনায় এই হামলা হয় বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। হামলায় একজন গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদের আটকে রেখে করা হয় নির্যাতন। ফলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভুইঘর এলাকায়।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল নিয়ে মাদরাসায় ঢোকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। তারা অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে কথা বলতে গেলে মাদরাসার নুরানি বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক (অধ্যক্ষের আস্থাভাজন) রেদওয়ান সব ক্লাস থেকে শিক্ষার্থীদের জোর করে বের করে এনে অধ্যক্ষের বহালের পক্ষে স্লোগান দিয়ে হামলা চালায় ছত্র-জনতার ওপর। এসময় মাদরাসা প্রাঙ্গণ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার দাবি, তারা আজ শুধু অধ্যক্ষকে জানাতে এসেছিলেন যে, তার ওই চেয়ারে আর থাকার অধিকার নেই। তাকে দুর্নীতির দায় মেনে নিয়ে হয় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে, অন্যথায় ছাত্র-জনতা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। অধ্যক্ষের অসম্মান হয় এমন কোনো কাজ করতে চান না তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনরতদের ভাষ্য, কথা বলার এক পর্যায়ে নুরানি বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক রেদওয়ান মাদরাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে অধ্যক্ষের রুমে প্রবেশ করেন। এসময় মাদরাসার গভর্নিং বডির সদস্য কাজী আইয়্যুবি, নবী আহমেদ ও শিক্ষক প্রতিনিধি আব্দুল মান্নান খানের প্রত্যক্ষ মদদে ও অংশগ্রহণে অধ্যক্ষের রুমেই হামলার শিকার হয় আন্দোলনরত ছাত্রজনতা। কাজী আইয়্যুবি ও তার ছেলে প্রথমে আঘাত করেন ছাত্রদের ওপর। এসময় আইয়্যুবি বলেন, 'চার-পাঁচটা মরলে কিছু হবে না, পিডা।' এরপর উপর্যপুরি হামলার শিকার হয় ছাত্র-জনতা। হামলায় একজন গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কয়েকজনকে অফিস রুমে আটকে রেখে করা হয় নির্মম নির্যাতন।

ছাত্রদের আহত হওয়ার কথা শুনে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। দুপুর দুইটা পর্যন্ত চলে হামলা, পাল্টা হামলা।

স্থানীয়রা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচার সরকার পতনের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারে দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে ওমরাহ পালনের কথা বলে দেশ ছাড়েন খালিদ সাইফুল্লাহ। আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হলে ১৭ দিন পর মাদরাসায় আসেন তিনি। অধ্যক্ষ বিভিন্ন মাধ্যমে আন্দোলনরতদের সাথে মীমাংসা করার চেষ্টাও করেন। কিন্তু আন্দোলনরত ছাত্র জনতা দুর্নীতিবাজ এই অধ্যক্ষের সাথে কোনো আপস করতে রাজি হননি। 

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্ররা নানা অভিযোগ তুলেছেন। এ ব্যাপারে কথা বলতে অধ্যক্ষ খালিদ সাইফুল্লাহকে একাধিক ফোন করা হলেও তিনি কল ধরেননি।