ঘন ঘন ঢেকুর ওঠা হতে পারে যেসব রোগের লক্ষণ

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিরক্তিকর একটি অভ্যাস ঢেকুর ওঠা। বার বার ঢেকুর উঠলে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। দুই একবার এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। ভারী কিছু খাওয়ার পর ঢেকুর উঠতে পারে। কিন্তু এটি যদি সবসময়ের সঙ্গী হয় আর ঘন ঘন ঢেকুর উঠতে থাকে তাহলে তা চিন্তার কারণ বটে। 

‘আমেরিকান জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি’ পত্রিকার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাপানের ওসাকা মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ঘন ঘন ঢেকুর তোলা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। অনেকসময় এটি অন্য কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। শুরু থেকেই সতর্ক না হলে পরবর্তীতে পেটের জটিল রোগও হতে পারে।

জাপানি গবেষক ইয়াসুহিরো ফুজিয়ারার মতে, পুরুষরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, ক্রমাগত বাইরের খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত তেল-মশলাদারযুক্ত খাবার খাওয়ার ঝোঁক, মাত্রাতিরিক্ত নেশা এই সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। 

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যারা অতিরিক্ত নরম পানীয়, অ্যালকোহল, বেশি চিনি দেওয়া খাবার খান তাদেরই ঘন ঘন ঢেকুর ওঠে। এছাড়া যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি এবং যারা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ওষুধ নিয়মিত খান, তাদের এই সমস্যা বাড়ে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘন ঘন ঢেকুর ওঠার সমস্যা যদি ক্রনিক বা নিয়মিত হয়ে যায়, তখন তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘বেলচিং ডিজঅর্ডার’ বলা হয়। হজমক্ষমতা খুব কমে গেলে খাদ্যনালি দিয়ে হাওয়া বাইরে বেরিয়ে আসতে থাকে। দেখা দেয় পেট ফাঁপার সমস্যা। পাকস্থলীতে কোনো রোগ হলে কিংবা আলসার বাসা বাঁধলেও এমনটা হতে পারে। তাই শুরু থেকেই চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন।

ঢেকুরের সঙ্গে আনুষঙ্গিক আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই যেমন- পেটে যন্ত্রণা, খিদে কমে যাওয়া, বমি ভাব, বদহজম ইত্যাদি। এসব সমস্যা যদি লেগেই থাকে তাহলে বুঝতে হবে, পাকস্থলী বেহাল হতে শুরু করেছে। 

চিকিৎসকদের পরামর্শ, খাবার খাওয়ার সময়ে পেট কিছুটা খালি রেখে খাওয়াই উচিত। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই খিদে পেলে এই নিয়ম মানেন না। পাকস্থলীর যতটা ধারণ ক্ষমতা, তার চেয়ে বেশি খেয়ে ফেললেই এমনটা হয়। পাকস্থলী থেকে বের হওয়া অ্যাসিড খাদ্যনালি দিয়ে উপরে উঠে আসতে থাকে। তখন গলাবুক জ্বালা করে, চোঁয়া ঢেকুর ওঠে। 

এই সমস্যা থেকে বাঁচতে পরিমিত খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। খাবার ভালো মতো চিবিয়ে খান। তেলমশলাজাতীয় খাবার না খেয়ে বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে হবে। যেকোনো রকম নরম পানীয় বা প্যাকেটজাত পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে।