সিআইবিতে ভুল তথ্য দিচ্ছে ব্যাংক

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

একটি কোম্পানির একাধিক পণ্য ও সেই পণ্য তৈরির জন্য একাধিক কারখানা থাকাতে পারে। কিন্তু কোন পণ্যের কোন কারখানার জন্য ঋণ নেওয়া হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করছে না অনেক ব্যাংক। এখন থেকে সবকিছু ঠিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে রিপোর্ট করার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দেশে কার্যরত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পৃথক পৃথক স্থানে একই বা ভিন্ন খাতের পণ্যের জন্য একাধিক ঠিকানায় স্থাপিত একটি কোম্পানির বিভিন্ন ইউনিটের নামে ঋণ দিয়েছে। সিআইবি রিপোর্টিং এ স্বচ্ছতা আনার জন্য ঋণগুলো রিপোর্টিং করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) তে নিবন্ধিত একটি কোম্পানি একই বা ভিন্ন খাতের পণ্য বা সেবা উৎপাদনের জন্য একাধিক ঠিকানায় ইউনিট বা কারখানা স্থাপন করলে সেই ইউনিট বা কারখানাগুলোকে আরজেএসসির যে নামে নিবন্ধন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে হুবহু সেই নামেই সিআইবি ডাটাবেজে রিপোর্ট করতে হবে।

উদাহরণ হিসাবে বলা হয়, ‘ক লিমিটেড' নামক একটি কোম্পানি আরজেএসসিতে নিবন্ধিত। এই কোম্পানি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পণ্য বা সেবা উৎপাদনের জন্য ইউনিট/কারখানা স্থাপন করলে যেমন ‘ক লিমিটেড (ইউনিট-১)’, ‘ক লিমিটেড (ইউনিট-২)’, ‘ক লিমিটেড (ইউনিট-৩)’, ‘ক লিমিটেড (গার্মেন্টস ইউনিট)' ইত্যাদি নামীয় ইউনিটগুলোকে ‘ক লিমিটেড’ কোম্পানির আওতাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে গণ্য করে তদনুযায়ী সিআইবি ডাটাবেইজে রিপোর্ট করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয় ‘এক্স ইউনিট ২ লিমিটেড’ এবং ‘এক্স লিমিটেড ইউনিট ২' দুইটি ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানি হিসেবে আরজেএসসি তে নিবন্ধিত হলে ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানি হিসেবেই সিআইবি ডাটাবেইজে রিপোর্ট করতে হবে।

সিআইবি এর পূর্ণরূপ ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো। সিআইবি হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণীত একটি নীতিমালা, যার মাধ্যমে কোনো গ্রাহকের ঋণ গ্রহণের সময় ওই গ্রাহক পূর্বে কোনো ঋণ নিয়েছিল কি না তা দেখা হয়। ঋণ নিয়ে থাকলে সময়মতো ঋণের কিস্তি বা পুরো ঋণ পরিশোধ করেছে/করছে কি না তাও দেখা হয়। যাতে ঋণখেলাপি না হয় এবং ঋণের প্রবাহ যথাযথ থাকে। এতে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হ্রাস পায়। কোনো গ্রাহক নতুন কোনো ঋণ নিতে চাইলে ঋণের আবেদনের তথ্যাবলী সিআইবি-এর ওয়েবসাইটে ঢুকে পূরণ করলে গ্রাহকের অতীত ইতিহাস পাওয়া যায়। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি বা এক মালিকানা ব্যবসায়, বা অংশীদারি ব্যবসায় অথবা কোম্পানির বেলায় ঋণ সম্পর্কিত রিপোর্ট পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান খুব সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, ঋণ গ্রহীতার আবেদন অনুমোদন করা হবে, না কি বাতিল করা হবে। খেলাপি ঋণ কমানোর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৯২ সালের ১৮ আগস্ট সিআইবি সিস্টেম চালু করে। ২০১১ সালের ১৯ জুলাই থেকে এটি অনলাইনে কার্যক্রম শুরু করে।