পাঁচ শ্রেণির মানুষের জন্য নবীজির সুপারিশ

১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

হাশরের মাঠের পরিস্থিতি হবে অনেক কঠিন। সবাই সেখানে পেরেশান থাকবে। সেই অবস্থায় আশার আলো হয়ে দেখা দেবে প্রিয় নবীর সুপারিশ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি এক দাওয়াতে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। একসময় তিনি বললেন, ‘আমি কেয়ামতের দিন সবার সর্দার হব। সেই কঠিন দিনে কষ্ট সইতে না পেরে মানুষ অস্থির হয়ে যাবে এবং কার দ্বারা সুপারিশ করলে আল্লাহ কবুল করবেন সেরূপ লোক তালাশ করতে থাকবে। অতঃপর অন্যান্য নবী থেকে ব্যর্থ হয়ে সবশেষে লোকজন আমার কাছে এসে বলবে, আপনি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, আমাদের কষ্ট তো আপনি দেখেছেন, এখন দরবারে এলাহিতে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন যাতে আমাদের পরিত্রাণ দেওয়া হয়। নবীজি (সা.) বলেন, আমি তখন আল্লাহর আরশের নিচে এসে সেজদায় পড়ে কান্নাকাটি করতে থাকব। অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হবে, আপনি মাথা উঠান এবং ফরিয়াদ পেশ করুন। আপনার ফরিয়াদ কবুল করা হবে। আমি তখন মাথা উঠিয়ে বলব, হে প্রভু! তুমি আমার উম্মতগণকে ক্ষমা করো।

আল্লাহ তায়ালা বলবেন, হে আমার প্রিয় নবী! আমার বেগুনাহ বান্দাদের বেহেশতের ডানদিকের দরজা দিয়ে প্রবেশ করান। অন্য দরজা দিয়েও ইচ্ছে করলে ঢোকাতে পারেন।’ (মেশকাত)

হাশরের মাঠে পাঁচ শ্রেণির মানুষের জন্য সুপারিশ করবেন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)। তারা হলেন-

১. হাশরের ময়দানে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে শিগগিরই হিসাব-নিকাশের কাজ শুরু করার জন্য সব নবীর কাছে যেতে শুরু করবে। কিন্তু সবাই অপারগতা প্রকাশ করার পর বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হবে এবং তিনি পৃথিবীর সব মানবজাতির জন্য সুপারিশ করবেন, যেন বিচার শুরু হয়ে যায়

২. দ্বিতীয় সুপারিশ হবে প্রথম দরজার মুমিনগণকে হিসাব-নিকাশ ছাড়াই বেহেশতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য। এটাও শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) করবেন

৩. তৃতীয় সুপারিশ হবে যারা স্বীয় অপকর্মের কারণে জাহান্নামে যাওয়ার উপযুক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। এ সুপারিশও নবীজি (সা.) করবেন। তা ছাড়া আলেম-হাফেজ, শহিদ এবং অন্যান্য মুমিনও এ সুপারিশ করার সুযোগ পাবেন

৪. চতুর্থ সুপারিশ হবে ওই গুনাহগারদের জন্য যাদের জাহান্নামে প্রবেশ করানো হয়েছে। তাদের জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আরজ পেশ করা হবে। নবী মুহাম্মদ (সা.)-সহ অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কেরাম এবং ফেরেশতাগণ সুপারিশ করবেন

৫. পঞ্চম সুপারিশ করা হবে বেহেশতে প্রবেশকারীদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য।

সেদিন শুধু আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-ই সুপারিশ করতে পারবেন। হজরত আউফ বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত-রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে এক দূত এসে আমাকে জানালেন, আল্লাহ তায়ালা আমাকে দুটি প্রস্তাব দিয়ে পাঠিয়েছেন। এ দুটির মধ্যে থেকে যেকোনো একটি গ্রহণ করতে হবে।

প্রস্তাব দুটি হলো-

১. আমার অর্ধেক উম্মতকে বিনা হিসেবে বেহেশতে দেওয়া হবে

২. আমি যেকোনো উম্মতের জন্য আমার ইচ্ছেমতো সুপারিশ করতে পারব। আমি সুপারিশ করার ক্ষমতাটাকেই গ্রহণ করেছি। কাজেই আমি মুশরেক ব্যতীত সবার জন্য শাফায়াত করব।