দাপুটে জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল দক্ষিণ আফ্রিকা

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আগের ম্যাচ যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই যেন ফের শুরু করলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। আরেকটি দারুণ ইনিংস খেললেন তিনি। তবে দলের আর কেউ ব্যাট হাতে দাঁড়াতেই পারলেন না সেভাবে। চমৎকার বোলিংয়ে আফগানিস্তানকে অল্পে গুটিয়ে দেওয়ার পর এইডেন মার্করামের ফিফটিতে বড় জয় পেল দক্ষিণ আফ্রিকা।

সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ৭ উইকেটে। শারজাহতে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ১৭০ রানের লক্ষ্য ১০২ বল হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলে প্রোটিয়ারা। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত করে ফেলেছিল আফগানিস্তান।

সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়ে জয়ে বড় অবদান রাখা রাশিদ খান হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যায় শেষ ম্যাচে খেলতে পারেননি। বিশ্রাম দেওয়া হয় প্রথম ম্যাচের নায়ক বাঁহাতি পেসার ফাজাল হাক ফারুকিকে।

এদিন আফগানদের প্রথম আট ব্যাটসম্যানের মধ্যে ১০ এর বেশি রান করতে পারেন কেবল গুরবাজ। ১১ রানের জন্য টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পাননি এই ওপেনার। ৯৪ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৯ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই। প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে ফেরার পরও মোট ১৯৪ রান করে সিরিজের সেরাও গুরবাজ।

হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। আফগানিস্তানকে ৩৪ ওভারে অল আউট করে দিতে দুইটি করে উইকেট নেন লুঙ্গি এনগিডি, আন্দিলে ফেলুকোয়াইয়ো ও নাবাইয়োমজি পিটার। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৭ বলে অপরাজিত ৬৯ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন মার্করাম।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারায় আফগানিস্তান। অভিষিক্ত ওপেনার আব্দুল মালিক ১৯ বল খেলে করেন ৯ রান। রেহমাত শাহ, আজমাতউল্লাহ ওমারজাই, মোহাম্মদ নাবিরা টিকতেই পারেননি। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্তে সহজাত ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান গুরবাজ। ফিফটি করেন তিনি ৪৭ বলে। জাগান অষ্টম ওয়ানডে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। কিন্তু ফেলুকোয়াইয়োকে বেরিয়ে এসে খেলে ডিপ কাভারে ক্যাচ দিয়ে মাইলফলক থেকে ১১ রান দূরে থামেন তিনি। ৯ নম্বরে নামা মোহাম্মদ গাজানফারের ১৫ বলে অপরাজিত ৩১ রানের ক্যামিওতে দেড়শ ছাড়াতে পারে আফগানরা।

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ৪০ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ভিত গড়ে দেন টেম্বা বাভুমা ও টনি ডি জোর্জি। দুজনের কেউ অবশ্য ইনিংস টেনে নিতে পারেননি। ডি জোর্জি ৩১ বলে করেন ২৬, বাভুমা ২৮ বলে ২২। তিনে নেমে ১৮ রান করে বিদায় নেন রিজা হেনড্রিকস। এরপর ট্রিস্টান স্টাবসের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৯০ রানের জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মার্করাম। ৪২ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন স্টাবস। এই সিরিজের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সব সংস্করণ মিলিয়ে পাঁচ ম্যাচে কোনো জয় ছিল না আফগানিস্তানের। সেই তারাই জিতে নিল সিরিজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ৩৪ ওভারে ১৬৯ (গুরবাজ ৮৯, মালিক ৯, রেহমাত ১, শাহিদি ১০, ওমারজাই ২, ইকরাম ২, নাবি ৫, খারোটে ০, গাজানফার ৩১*, ফারিদ ৪, নাভিদ ১; এনগিডি ৬-১-২২-২, ফোরটান ১০-১-৪৪-১, মুল্ডার ২-০-২১-০, মার্করাম ৭-০-৪১-০, পিটার ৫-০-২২-২, ফেলুকোয়াইয়ো ৪-০-১৭-২)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩৩ ওভারে ১৭০/৩ (ডি জর্জি ২৬, বাভুমা ২২, হেনড্রিকস ১৮, মার্করাম ৬৯*, স্টাবস ২৬*; নাভিদ ৫-০-৪৫-০, গাজানফার ৭-০-৩৮-১, নাবি ৮-০-৩৭-১, ফারিদ ৭-১-১৭-১, খারোটে ৬-০-৩১-০, গুরবাজ ০-০-১-০)

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ী আফগানিস্তান

ম্যান অব দা ম্যাচ: রাহমানউল্লাহ গুরবাজ

ম্যান অব দা সিরিজ: রাহমানউল্লাহ গুরবাজ