আমরা সরকারকে দুটি রোড ম্যাপ দিয়েছি: জামায়াত আমির

২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা সরকারকে দুটি রোড ম্যাপ দিয়েছি। প্রথমটি হচ্ছে সংস্কার। পরেরটি নির্বাচন। প্রথমটা সফল না হলে দ্বিতীয়টা ব্যর্থ হবে। আমরা কোনো ব্যর্থ নির্বাচন চাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি সফল ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ডাকাতদের হাতে নিহত সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম সরোয়ার নির্জনের টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, তানজিম হত্যাকাণ্ডের এক মাস আগে এই সন্ত্রাসীরা জামিন পেয়েছে। জেল থেকে বের হয়েই এরা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেললো। একইভাবে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিনে বের হয়েছে। আরও অনেকেই বের হয়েছে। এসব ঘটনার সঙ্গে যদি কোনো যোগসূত্র থাকে অবশ্যই তাতে দুর্বলতা দেখানোর কোনো সুযোগ নাই। সরকারকে কঠোর হতে হবে। সরকার ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশে আমাদের সবার, কোনো দলের নয়, কোনো ব্যক্তির নয়। দেশ ১৮ কোটি মানুষের। ১৮ কোটি মানুষের স্বার্থে যা করা প্রয়োজন, তাই করতে হবে।

সরকার পতনের আন্দোলন পূর্বপরিকল্পিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত নয়। এটা মূলত কোটা কেন্দ্রিক ছাত্রদের অধিকার আদায়ের বিষয়ে। তারা কোটা বাতিল চায়নি, সংস্কার চেয়েছিল। সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি না মেনে উল্টো দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আলোচনার দরজা বন্ধ রেখে লাগামহীন কথা ও কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণের কারণে এক দফায় চলে আসে। সরকার শুরুতে দাবি মানলে এমনটি হতো না। যে সময় সরকার দরজা খুলেছে তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।

এখন আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্র করছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনাই বলে দেয় তারা এটি করছে। শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও রাজনীতি বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি পালিয়ে গেছেন এটা আমি বলতে চাই না। কারণ একটা রাজনীতিবিদের বিষয়ে এ কথা বললে আমার নিজেরই লজ্জা লাগে। তিনি সরে গিয়েছেন নিশ্চয় তিনি উপলব্ধি করেছেন দেশের মানুষ তাকে ভালোবাসে না। যেহেতু দেশের মানুষ তাকে ভালোবাসে না। তাই তার রাজনীতি করার কোনো মানে হয় না। তিনি গিয়েছেন জাতি মুক্ত হয়েছেন। জাতিকে শান্তিতে থাকতে দিন। এখন কথা হলো তিনি যদি অপরাধী হন তাহলে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা কারও ওপর প্রতিশোধ নেব না, আইন হাতে তুলে নেব না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা গোটা যুবসমাজের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গণহত্যা করেছেন। নৈতিক দিক থেকে তারা পরাজিত হয়েছেন। তাদের নিজেদেরই মূল্যায়ন করতে হবে, তারা রাজনীতি করার কোনো অধিকার রাখেন কি না।

এ সময় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মো. রফিকুল ইসলাম খান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, জেলা সেক্রেটারি হুমায়ুন কবীর, জেলা সহকারী সেক্রেটারি হোসনী মোবারক বাবুল ও শফিকুল ইসলাম খানসহ দলের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।