বলিউডে ব্যর্থ, বাংলাদেশে এসে সুপারস্টার

০৬ অক্টোবর, ২০২৪

মুম্বাইয়ে ১৯৬২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন করেন এই অভিনেতা, মা-বাবা নাম রেখেছিলেন সুয়াশ পান্ডে। প্রখ্যাত হার্ট সার্জন শরদ পান্ডে ও চিকিৎসক স্নেহলতা পান্ডের ছেলে হওয়া সত্ত্বেও তিনি কিছুদিন গাড়ির ব্যবসাও করেন। বলা হচ্ছে অভিনেতা চাঙ্কি পান্ডের, যিনি বলিউডের শীর্ষ অভিনেতা না হলেও বাংলাদেশে সুপারস্টার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। অনেকেই জানেন না, চাঙ্কি পান্ডের কয়েকটি সিনেমা নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ব্যর্থ হয়। এতে তিনি বলিউড ছেড়ে বিদেশি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন, যা তাকে পরবর্তী সময়ে তারকাখ্যাতি এনে দেয়।

অভিনয়ে অভিষেক-
১৯৮৭ সালে ‘আগ হি আগ’ অভিনয়ের মাধ্যমে সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন চাঙ্কি পান্ডে। যেখানে অভিনয় করেছিলেন ধর্মেন্দ্র, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, শত্রুঘ্ন সিনহা, নীলম, রিচা শর্মা, শক্তি কাপুর ও ড্যানি ডেনজংপার মতো তারকারা। তাদের সঙ্গে অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অভিনয় দক্ষতার স্বাক্ষর তৈরি করেন তিনি। পরের বছরগুলোতে চাঙ্কি সহ-অভিনেতা হিসেবে কয়েকটি সিনেমায় কাজ করেন; তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘তেজাব’।

নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে ‘বিশ্বাত্মা’, ‘আঁখে’, ‘খতরো কে খিলাড়ি’ ও ‘জাহরিলে’র মতো সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন চাঙ্কি পান্ডে। এরপরই তিনি বলিউড থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, তাকে কেবল নায়কের ভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করা হচ্ছে এবং তার সিনেমাগুলো বক্স অফিসে আশানুরূপ পারফর্ম করছে না। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে একজন সুপারস্টার হয়ে ওঠেন।

বাংলাদেশে কাজ করতে বাধ্য-
২০১৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে চাঙ্কি বলেন, ‘বলিউডে আমি যে ধরনের কাজ চেয়েছিলাম তা পাচ্ছিলাম না। আমার এক বন্ধু আমাকে বাংলাদেশে ছবি করতে বাধ্য করেছিল। টাকাটা ভালো ছিল এবং সেই সময় আমার খুব টাকার দরকার ছিল, তাই আমি প্রস্তাবটা লুফে নিলাম। এটা আমার জন্য এক ধরনের বাজি ছিল। কিন্তু আমার প্রথম ছবি এতটাই হিট হয়েছিল যে, আমি আর পেছনে ফিরে তাকাইনি।’ ১৯

সংগ্রাম-
নিজের সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে চাঙ্গি বলেন, ‘আমার সংগ্রামের দিনগুলো খুব আলাদা ছিল। কোনো কাস্টিং ডিরেক্টর বা ডিজিটাল মিডিয়া ছিল না, তাই প্রযোজকদের অফিসের সামনে আমাদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হতো। তাদের সঙ্গে দেখা করা ও ছবিসহ অ্যালবাম দেখাতে গিয়ে নাচতে হতো এবং জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের দৃশ্যে অভিনয় করতে হতো।’ তিনি বলেন, ‘কাজটা সহজ ছিল না, কিন্তু মজার ছিল। সেই দিনগুলো ছিল আমার সংগ্রামের দিন। আমি একজন পার্টটাইম হস্টলার এবং পার্টটাইম কার ডিলার ছিলাম। তাই প্রতিদিনই আমি আলাদা আলাদা গাড়িতে চড়ে প্রযোজকদের অফিসে যেতাম।’

চাঙ্কি পান্ডের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি-
চলচ্চিত্র প্রযোজক পহলাজ নিহালনী এক সাক্ষাৎকারে জানান, কীভাবে দিব্যা ভারতী ১৯৯৩ সালে একটি সিনেমায় চাঙ্কি পান্ডের বিপরীতে অভিনয় করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। বলিউড থিকানাকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে নিহালনী বলেন, ‘দিব্যা (ভারতী), পূজা ভাট ও জুহি চাওলার মূলত সিনেমাটি করার কথা ছিল। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, দিব্যাকে চাঙ্কির সঙ্গে জুটি বাঁধতে হবে এবং ঋতু শিবপুরী গোবিন্দের বিপরীতে থাকবেন। যখন তাকে এই কথা বলা হলো তখন তিনি বিরক্ত হন। তিনি আমাকে ফোন করে হুমকি দিতে শুরু করেন এবং আমাকে ডেকে পাঠান। তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি বলেন, ‘শুনেছি, আমি চাঙ্কির বিপরীতে?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ’। এরপরই তিনি সিনেমাটি করতে অস্বীকার করেছিলেন।